রাতেরবেলায় নাক ডাকা উচ্চ রক্তচাপের ইঙ্গিত

রাতেরবেলায় নাক ডাকা উচ্চ রক্তচাপের ইঙ্গিত

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ঘুমের ঘোরে অনেকেই সশব্দে নাক ডাকেন। নাক ডাকার গর্জনে অনেকসময় আশপাশের মানুষজনের ঘুমের বারোটা বাজে। অনেকেই মনে করেন, না ডাকা খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়, তবে এই উপসর্গকে অবহেলা না করাই ভালো। চিকিৎসকদের মতে, শ্বাস-প্রশ্বাসের অসুবিধা ফলে মানুষ নাক ডাকে। ফ্লিন্ডার ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণায় জানা গেছে নিয়মিত নাক ডাকা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়, বিশেষ করে অতিরিক্ত ওজনের মধ্যবয়সী পুরুষদের ক্ষেত্রে। গবেষণায় বলা হয়েছে নাক ডাকার উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়ে রক্তচাপের ওপর। উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ক্লিনিকাল মূল্যায়ন এবং সম্ভাব্য থেরাপিউটিক কৌশল অবলম্বন করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এনপিজে ডিজিটাল মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় নাক ডাকা এবং উচ্চ রক্তচাপের মধ্যে সম্পর্ক অন্বেষণ করার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে একাধিক বাড়িতে রাতেরবেলায় নাক ডাকা পর্যবেক্ষণের জন্য প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথের ডাঃ বাস্তিয়ান লেচ্যাটের মতে রাতে নিয়মিত নাক ডাকা এবং উচ্চ রক্তচাপের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য সংযোগ রয়েছে। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১৫% অতিরিক্ত ওজনের পুরুষেরা ঘুমের ২০%-এরও বেশি সময় ধরে নাক ডাকে। এবং এই নিয়মিত রাতে নাক ডাকা উচ্চ রক্তচাপ এবং অনিয়ন্ত্রিত হাইপারটেনশনের সাথে সম্পর্কিত। শ্বাস-প্রশ্বাসের অসুবিধা ছাড়াও নাক ডাকার অন্য একটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। তা হল ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’। নাক ডাকা এবং স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণগুলো প্রায়শই একই রকম দেখা গেছে। স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত হলে ঘুম থেকে ওঠার পর গলা খুব বেশি শুকিয়ে আসে। এই রোগে আক্রান্ত হলে শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়। তাই ঘুমের ঘোরে মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে হয়। ফলে গলা শুকিয়ে আসে। সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে ঘুমিয়ে পড়লে ঘাড় ও গলার পেশি শিথিল থাকে। কিন্তু স্লিপিং ডিজ়অর্ডারে যারা ভোগেন, তাদের ক্ষেত্রে ঘুমিয়ে পড়লে শ্বাসক্রিয়া বাধা পায়। এর ফলে শরীরের কোশে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত নাক ডাকেন তাদের অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি প্রায় দ্বিগুণ। অনেকসময় শুধু নাক ডাকা উচ্চ রক্তচাপের প্রাথমিক সতর্কতা চিহ্ন হিসাবেও কাজ করতে পারে, কারণ নাক ডাকার কারণে ঠিকমতো ঘুম হয় না ফলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। সুতরাং অপর্যাপ্ত ঘুম, অত্যধিক তন্দ্রাভাব বা ঘুমের সময় শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা অথবা নাক ডাকার সমস্যা থাকলে সতর্ক হন। অবিলম্বে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন।