পরিবেশের জন্য গুরুতর সমস্যাজনক উপাদান প্লাস্টিক। কিছু কিছু সমীক্ষায় দেখা গেছে প্রায় কয়েক লক্ষ কোটি ক্ষুদ্র প্লাস্টিক টুকরো কেবল জলভাগেই রয়েছে। মহাসাগর থেকে পর্বতের চূড়ো – কোথাও প্লাস্টিকের টুকরোর অভাব নেই। প্লাস্টিক ব্যাগ, লন্ড্রির ব্যবহার্য প্লাস্টিক, পানীয় খাওয়ার স্ট্র ইত্যাদি আরোও নানা ধরণের ব্যবহার করা প্লাস্টিকের উপাদান রোজ জলে, মাটিতে, পাহাড়ে পড়ছে এবং টুকরো টুকরো হয়ে ক্ষুদ্রাকৃতি ধারণ করছে, যা প্রকৃতির জন্যে বিপজ্জনক। আর এই বিপদ থেকে প্রকৃতিকে রক্ষা করতে চেকরিপাবলিকের প্রাগের চেক ইউনিভার্সিটি অফ কেমিস্ট্রি অ্যাণ্ড টেকনোলজির রসায়নবিদ মার্টিন পুমেরা তৈরি করেছেন একটি অভিনব মাইক্রোরোবট। একদশক আগে থেকে বিজ্ঞানমহলে এধরণের মাইক্রোরোবট তৈরির প্রচেষ্টা শুরু হয়। এই রোবট খুব সহজে জলে চলাচল করতে পারে। আয়তনেও খুব ছোট -পেন্সিলের ডগার মতো।
পুমেরার তৈরি করা রোবট দেখতে অনেকটা তারার মতো। এতে আছে চৌম্বক শক্তি। সূর্যালোক এই রোবটের ওপর এসে পড়লেই ঐ তাপে রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু হয় রোবটে, এবং তারফলে রোবট জলের নির্দিষ্ট দিকে চালিত হয়। আসলে এই রোবটের মধ্যে আছে বিস্মুথ ভানাডেট বলে একটি উপাদান- এটিই সূর্যালোক পড়লে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটানো কাণ্ডারি। বিস্মুথ ভানাডেট ম্যাগনেটিক ফিল্ম দ্বারা কোট বা আবৃত করা থাকে। তারফলে সূর্যালোক পড়লে আলো ও তাপ নির্দিষ্ট মাত্রায় একটি অংশে পড়ে প্লাস্টিকের টুকরো নষ্ট হয়ে যায়। এইভাবে জলের মধ্যে ছোট প্লাস্টিকের টুকরো খুঁজে খুঁজে নষ্ট করে দেয় মাইক্রোরোবট। তবে এই রোবটের কার্যপ্রণালী পরিবেশের জন্যে ক্ষতিকারক নয় কিনা, এবং নানা অন্যান্য পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। তবুও মেডফোর্ডের টাফটস ইউনিভার্সিটির জীববিজ্ঞানী ডগলাস ব্ল্যাকিস্টোন আশাবাদী গোটা পৃথিবীর জলভাগজুড়ে এইধরনের মাইক্রোরোবট বড় ভূমিকা পালন করবে প্লাস্টিক দূরিকরনে।