লুকানো হিরের ভাণ্ডার বুধে

লুকানো হিরের ভাণ্ডার বুধে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৯ জুলাই, ২০২৪
হিরে

বুধ- সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ। সৌরজগতের সবচেয়ে ছোটো কিন্তু সবচেয়ে রহস্যময় গ্রহ। সেই গ্রহে এখনও পা রাখতে পারেননি মহাকাশবিজ্ঞানীরা। অদূর ভবিষ্যতে রাখার কোনও সম্ভাবনাও নেই। প্রায় ‘অসম্ভবের’ তালিকাতেই রয়েছে সেটি। সম্প্রতি এক গবেষণা বলছে, সেই গ্রহেই রয়েছে হিরের এক বিপুল সম্ভার। হিরের খনি বা হিরের পাহাড় নয়, অনুমান করা হচ্ছে, গ্রহের মাটির নীচের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে হিরের পুরু আস্তরণ রয়েছে। নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে এই নিয়ে একটি নতুন গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। বুধের রহস্যের অন্ত নেই। পৃথিবীর মতো বুধেরও নিজস্ব চৌম্বকীয় ক্ষেত্র রয়েছে, কিন্তু তুলনায় সেটি দুর্বল। কিন্তু বুধের মতো ছোটো গ্রহের চৌম্বকীয় ক্ষেত্র কী করে হল, এই প্রশ্ন আজকের নয়। তাছাড়াও, সূর্যের সবচেয়ে কাছে থেকেও বুধ ভৌগলিক ভাবে সক্রিয় রয়েছে কীভাবে? চিন এবং বেলজিয়ামের এক দল গবেষক বুধের মাধ্যাকর্ষণ ক্ষেত্রের মডেলের পুনর্মূল্যায়নের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল। বুধের অভ্যন্তরীণ পরিবেশের সম্ভাব্য কাঠামো তাদের কৌতূহল উদ্রেক করেছে। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মেসেঞ্জার মিশন সম্প্রতি জানিয়েছে বুধের মাটিতে যে ধূসর ছোপ দেখা যায় সেগুলো সম্ভবত গ্রাফাইট, যা কার্বনেরই আর একটি রূপ। প্রায় সাড়ে চারশো কোটি বছর আগে আর পাঁচটা গ্রহের মতোই লাভায় পরিপূর্ণ মহাসাগর ঠান্ডা হয়ে জন্ম হয়েছে বুধের। কিন্তু বুধের ওই মহাসাগর কার্বন এবং সিলিকেট সমৃদ্ধ ছিল বলে জানা যায়। সেই উপাদানগুলো প্রথমে জমাট বাঁধে। পরে তাকে ঘিরে স্ফটিকের আকারে জমা হয় কার্বনের লাভা। বিজ্ঞানীদের অনুমান বুধের মাটির স্তর অনেকটাই গভীর। ফলে গ্রহের ভিতরের ও বাইরের তাপমাত্রা এবং বায়ুচাপের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এই ফারাকের কারণেই সেখানে স্ফটিকাকারে জমা হওয়া কার্বন আসলে হিরে হওয়ারই কথা। কম্পিউটার সিমুলেশন্স ব্যবহার করে দেখা যায় বুধের মাটির তলায় এই অবস্থায় হিরের স্তর হয়ে রয়েছে ১৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × one =