
নগর পরিকল্পনার বড় অংশ, হল যাতায়াতের রাস্তা পরিকল্পনা। কিছু ক্ষেত্রে, শহর সাজানোর আগেই রাস্তা তৈরী হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে নতুন করে রাস্তা বাড়িয়ে কিংবা চালু রাস্তায় যান চলাচলের নতুন নিয়ম এনে, যানজটের ভার কিছুটা কমানো যায়। আজকাল উন্নত দেশগুলির পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশগুলিতে ‘স্মার্ট সিটি’ তৈরী করবার জন্য ‘সাইকেল লেন’ তৈরি করা হচ্ছে। কলকাতাতেও অনেকে ভাবনাচিন্তা করছেন। কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে সাইকেল লেন সুবিধার চেয়ে অসুবিধা ডেকে আনতে পারে। সেটা এড়াবার জন্যে
‘স্মার্ট সিটি’ গবেষক শেং লিউ, সাইক্লিঙ লেন নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের একটি মডেল তৈরি করেছেন। তিনি ভ্যানকুভার এবং শিকাগো শহরের যানচলাচলের তথ্য সংগ্রহ করে সেই তথ্যের ভিত্তিতে, ঠিক কোন কোন জায়গায় সাইকেল লেন তৈরী হলে,কী কী সুবিধা বা অসুবিধা হতে পারে, তা নিয়ে আগে থেকেই সতর্ক থাকার কথা বলছেন। ফলত, নগর পরিকল্পনায় রাস্তায় সাইকেল লেন তৈরিতে ব্যাপক সুবিধা হবে। গাড়ির সংখ্যা ও রাস্তার বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী, মডেলটি পূর্বাভাস দিতে পারে, গন্তব্যে পৌঁছাতে যাত্রীদের কত সময় লাগতে পারে। এক্ষেত্রে লেন বানানোর পর যান চলাচলের ধরনে কী পরিবর্তন আসবে তাও বলা সম্ভব হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ব্যস্ত শহর হল শিকাগো। মডেলটি অনুমান করছে, সেখানকার রাস্তায় ৪০ কিলোমিটার সাইকেল লেন যোগ করলে গাড়ি চালকদের গন্তব্যে পৌঁছাতে এখনের চেয়ে ৯.৪ শতাংশ সময় বেশি লাগবে। অপর দিকে সাইকেল চালানোর হার ৩.৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬.১ শতাংশ হবে। সাইকেল পরিবহনের অনেকগুলি ইতিবাচক দিক রয়েছে। যেমন ব্যক্তিগত পরিবহনে খরচ কম, পরিবেশ উপযোগী, সাইকেল চালকদের শারীরিক কর্ম ক্ষমতার উন্নতি এবং ট্রাফিক দুর্ঘটনা জনিত মৃত্যুর হার হ্রাস । তবে অনেক যাত্রীই মনে করেন, ট্রাফিক গতিশীলতা উপেক্ষা করে যেখানে সেখানে সাইকেল লেন তৈরি করলে, তাতে যানজট আরও বাড়বে। এক্ষেত্রে অধ্যাপক লিউ পরামর্শ দিয়েছেন, “শুধুমাত্র রাস্তা থেকে সাইকেল লেন সরিয়ে ফেলা, যানজটের সমস্যা সমাধান করে না। উল্টে, সমস্যাকে আরো বাড়িয়ে দিতে পারে। সুতরাং সাইকেল লেন তৈরীর জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত ।” সেই লক্ষ নিয়ে তিনি এই মডেল টি পেশ করেছেন।