শহুরে পরিবেশে শিশুর অ্যালার্জির কারণ গাছের পরাগ

শহুরে পরিবেশে শিশুর অ্যালার্জির কারণ গাছের পরাগ

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৪ জুন, ২০২৪

বর্তমানে বিভিন্ন অ্যালার্জিজনিত কারণে হাঁপানির প্রকোপ দেখা যাওয়া বেশ সাধারণ ঘটনা। ইউরোপিয়ান রেসপিরেটরি জার্নালে প্রকাশিত সমীক্ষায় দেখা গেছে যেসমস্ত শিশুরা শহুরে পরিবেশে গাছ এবং আগাছা থেকে পরাগের সংস্পর্শে আসে তাতে তাদের হাঁপানি সহ শ্বাসকষ্টজনিত স্বাস্থ্য সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তাদের মতে একদিকে যেমন শহুরে পরিবেশের সবুজ এলাকা বায়ু দূষণ হ্রাস করে, বাচ্চাদের সক্রিয় করে, তাদের বিভিন্ন মাইক্রোবায়োটার সাথে ইতিবাচক যোগাযোগ করতে দেয়, তার ফলে শিশুর ইমিউন সিস্টেমের ইতিবাচক বিকাশ হয়, অপরদিকে এর থেকে শৈশবে হাঁপানি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ এপিডেমিওলজি অ্যান্ড পাবলিক হেলথ-এর প্রফেসর ও গবেষণার প্রধান লেখক এরিক ল্যাভিগনে বলেছেন, গাছ তাদের ক্যানোপি বা ছাউনির মাধ্যমে হাঁপানির প্রভাব কিছুটা কমাতে সাহায্য করতে পারে। গবেষকদের বক্তব্য গাছের ছাউনি শিশুদের মধ্যে হাঁপানির বিকাশের দিকে কিছু প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব প্রদান করে। তবে, আগাছার পরাগের সংস্পর্শে এলে এই প্রতিরক্ষামূলক প্রভাব চলে যায়।
জন্ম থেকে ছয় বছর বয়সের মধ্যে শৈশব হাঁপানি শনাক্ত করার জন্য, গবেষকরা অন্টারিও অ্যাসমা কোহর্ট ডাটাবেসে থেকে আট বছরের ডেটা বিশ্লেষণ করেছেন। গবেষকরা জন্মের সময় শিশুর পোস্টাল কোড থেকে ২৫০-মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে পরিবেশগত দিক দিয়ে গাছপালার ছাউনি ও বিভিন্ন সবুজের এক্সপোজার পরিমাপ করেছেন। আশ্চর্যজনকভাবে দেখা যায়, শহুরে পরিবেশে সবুজ স্থানের বিকাশ পরাগ ছড়ানোর সম্ভাবনা যেমন বাড়ায় তেমন গাছের ছাউনি থেকে প্রাপ্ত সুরক্ষা হ্রাস করে। ল্যাভিগনে বলেছেন শহরে গাছপালা বৃদ্ধির ওপর নজর দেওয়া প্রয়োজন, জনসাধারণের শহরে গাছের প্রভাব সম্পর্কে সচেতন হওয়া উচিত। এর মধ্যে শিশুদের শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্যের ওপর পরাগের প্রভাব জানা দরকার। শহরের নকশা পরিকল্পনা যারা করেন ও জনস্বাস্থ্য নিয়ে যারা কাজ করেন, তাদের শহরের নকশা নিয়ে ভাবা প্রয়োজন। যেমন আগাছার পরাগ প্রতিরোধের জন্য কাজ করা দরকার, তেমনই গাছ লাগানোর সময় তার থেকে অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা তা জেনে সেই অনুযায়ী গাছ লাগানো দরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 + 9 =