
শিলাবৃষ্টি হল বায়ুমণ্ডলের উচ্চতা ও তাপমাত্রার কারণে জলীয় বাষ্পের বরফে পরিণত হয়ে পৃথিবীর বুকে নেমে আসা কঠিন শিলা। শিলাবৃষ্টির শিলগুলোর আকৃতির তারতম্য বোঝার জন্য বিজ্ঞানীরা ঝড় নিয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন। এদের আকৃতি এত বড় হয় যে বিশ্বের যেকোনো স্থানের সম্পত্তির ক্ষতি ও প্রাণহানি হতে পারে।
একাধিক বিজ্ঞানী সমবেত হয়ে আমেরিকার বিস্তীর্ণ সমতলভূমিতে প্রবল ঝড়ের সময় তৈরি হওয়া শিলাবৃষ্টি নিয়ে গবেষণা করেছেন। বেশ কিছু ঝড়ে বড় ও ক্ষতিকারক শিলাবৃষ্টি হয়, আবার কিছু ঝড়ে কেবল হালকা বরফ পড়ে, কিন্তু কেন? এটা জানাই তাঁদের লক্ষ।
আবহওয়াবিদরা শিলাবৃষ্টি সম্বন্ধে কিছু অজানা রহস্য উদ্ঘাটন করতে চান, যা যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর দশ মিলয়ন ডলারের থেকে বেশি ক্ষতিসাধন করে। ছয় সপ্তাহব্যাপী এই গবেষণায় বহু বিজ্ঞানী আমেরিকার বিস্তীর্ণ সমতলভূমিতে বরফ ঝরানো ঝড়গুলো নিয়ে অনুসন্ধান চালালেন। এটি বিগত ৪০ বছরে শিলাবৃষ্টির ওপর হওয়া সবচেয়ে বড় মার্কিন গবেষণা।
বিজ্ঞানীরা বলেন এই শিলগুলি বজ্রপাতের সময় তৈরি হয়, যখন ওপরের দিকে প্রবাহিত বাতাস বৃষ্টির ফোঁটাগুলোকে শীতল অঞ্চলে নিয়ে যায় এবং সেখানে ফোঁটাগুলো জমে যায়।শিলের আকার ছোটো বা বড় হওয়া বাতাসের গতির ওপর নির্ভর করে।
এই গবেষণা অভিযানে বিজ্ঞানীরা শিলাবৃষ্টির উৎপত্তি ও শিলের বৃদ্ধির প্রক্রিয়া বোঝার চেষ্টা করছেন। প্রবল বাতাস বৃষ্টির ফোঁটাকে উচ্চতর, শীতল এলাকায় নিয়ে যায়, যেখানে তা জমে বরফে পরিণত হয়। এই শিলাবৃষ্টি পরিবেশে কীভাবে তৈরি হয় এবং কী শর্তে এটি বিপজ্জনক আকার ধারণ করে ইত্যাদি।
বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন প্রযুক্তির সাহায্যে এই গবেষণা চালাচ্ছেন। যেমন শিলাবৃষ্টি সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য একটি বিশেষ ফানেল-ফ্রিজার, শিলার আঘাত পরিমাপের জন্য সেন্সরযুক্ত প্যানেল, এবং এমন একটি ড্রোন যা চলচ্চিত্র “Twisters”-এও ব্যবহৃত হয়েছিল।
এই গবেষণা শিলাবৃষ্টির বিস্তার ও ক্ষতির পূর্বাভাস দিতে সাহায্য করবে, যা ভবিষ্যতে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচার জন্য এর প্রতিরোধ ও প্রস্তুতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।