অপরিণত শিশুদের ক্ষেত্রে মস্তিষ্ক ক্ষয়ের ব্যপক সম্ভাবনা থাকে। ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বাধীন একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে এই মস্তিষ্ক-ক্ষয়কে দ্রুত চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। প্রশ্ন এখানেই, কীভাবে চিহ্নিত করা যাবে অপরিণত শিশুদের মস্তিষ্ক-ক্ষয়?
অপরিণত শিশুদের অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াই মুখ্য ভূমিকাটি পালন করে। আসলে অন্ত্রের সঙ্গে মস্তিষ্ক বিকাশের একটি সম্পর্ক রয়েছে। শিশুর প্রথমাবস্থায় মস্তিষ্ক, প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং অন্ত্র একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকে। গবেষকেরা এরই নাম দিয়েছেন- ‘গাট-ইমিউন-ব্রেন অ্যাক্সিস'(অন্ত্র-রোগনিবারণ- মস্তিষ্ক অক্ষরেখা)। অন্ত্রের অণুজীব রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার সহযোগী। ভাগেস নার্ভ এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার মাধ্যমে অন্ত্রের সঙ্গে মস্তিষ্কের যোগাযোগ তৈরি হয়। গবেষক ডেভিড সেকি জানাচ্ছেন, এই গবেষণার মূল লক্ষ্য ছিল এটা জানা যে, অপরিণত শিশুদের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের বিকাশে ‘গাট-ইমিউন-ব্রেন অ্যাক্সিস’ এর ভূমিকাটি কী?
সুস্থ মানুষদের ক্ষেত্রে ফাঙ্গি বা ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদির মতো হাজারো প্রজাতির অন্ত্রের অণুজীব ভারসাম্য বজায় রাখে। কিন্তু অপরিণত শিশুদের ক্ষেত্রে ‘অন্ত্রের অণুজীব জগৎ’ পূর্ণবিকশিত হয় না বলে মস্তিষ্ক বিকাশে ঋণাত্মক প্রভাব ফেলে। যার ফলে মস্তিষ্কে ক্ষয় সৃষ্টি হয়।
সেকি ‘দের গবেষকদল কিছু প্যাটার্নের ‘অন্ত্র অণুজীব জগৎ'(মাইক্রোবায়োম) বা বায়োমার্কার্স চিহ্নিত করেছেন, যা অপরিণত শিশুর মস্তিষ্ক ক্ষয়ের অগ্রগতি ও প্রখরতাকে বুঝিয়ে দেবে। টি -সেল লেভেল মস্তিষ্কের ক্ষয় খুঁজে বের করতে পারে। এমনকি ঐ বিশেষ প্যাটার্ন মস্তিষ্কের পূর্ববর্তী বিকাশের ক্রমও বুঝতে সাহায্য করবে। এর ফলে চিকিৎসা শুরুর মাধ্যমে অপরিণত শিশুর মস্তিষ্ক ক্ষয় আটকানো সম্ভব। সঠিক সময়ের ২৮ সপ্তাহ আগে জন্মানো ৬০টি অপরিণত শিশু নিয়ে হয়েছিল পরীক্ষাটি, যাদের ওজন ছিল ১ কেজির কম।
এই অনুসন্ধানের পরে ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই গবেষক অ্যাঞ্জেলিকা বার্গার ও ডেভিড ব্যারি অপরিণত শিশুর স্নায়বিক বিকাশে অন্ত্র অণুজীবের গুরুত্ব আরো নিবিড়ভাবে দেখতে চাইছেন।