শীঘ্রই আকাশে এমন ধূমকেতুর দেখা মিলবে, যা সারা জীবনে একবারই দেখা সম্ভব

শীঘ্রই আকাশে এমন ধূমকেতুর দেখা মিলবে, যা সারা জীবনে একবারই দেখা সম্ভব

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১ আগষ্ট, ২০২৩

যারা আকাশ পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য সুখবর। তারা শীঘ্রই টেলিস্কোপ ছাড়াই খালি চোখে একটি ধূমকেতু দেখতে সক্ষম হবেন। এটি ৭১ বছরে সূর্যকে একবার পরিক্রমা করে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই ধূমকেতুটি সনাক্ত করতে পেরেছেন। এই ধূমকেতু 12P/Pons-Brooks নামে পরিচিত, ২০ জুলাই হঠাৎ এটা একশো গুণ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে আর এর থেকে ধ্বংসাবশেষ এবং বরফের স্তূপ মহাকাশে বিস্ফোরিত হয়েছিল। যা এটাকে ঘোড়ার নালের আকৃতি দিয়েছে, এই আকৃতি থেকে বিজ্ঞানীরা জনপ্রিয় আমেরিকান মুভি “স্টার ওয়ারস” এর মিলেনিয়াম ফ্যালকন স্পেসশিপের সাথে এই ধূমকেতুর তুলনা করেছেন। ধূমকেতু 12P/Pons-Brooks -এর বিচ্ছুরণ ২০ শে জুলাই হাঙ্গেরির নাইরেগিহাজা, হারসোনা অবজারভেটরির এলেক তামাস আবিষ্কার করেছিলেন। পরে যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ/ওপেন ইউনিভার্সিটির হেলেন উশারের নেতৃত্বে কমেট চেজার্স এডুকেশন ও আউটরিচ প্রকল্পের সদস্যরা ফকস টেলিস্কোপ ব্যবহার করে সন্ধান পান। মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারি হল্টের মতে, সম্ভবত ধূমকেতুটি ১০ বিলিয়ন কিলোগ্রাম ধুলো এবং বরফ মহাকাশে বিস্ফোরিত করেছে।
এই ধূমকেতু পরের বছর সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছাবে এবং ২ জুন, ২০২৪ -এ আমাদের গ্রহ থেকে এটা প্রায় ১৪৪ মিলিয়ন মাইল দূর দিয়ে অতিক্রম করবে। এর ঠিক আগেই উত্তর আমেরিকাতে ৮ই এপ্রিল, ২০২৪ এ পূর্ণ সূর্য গ্রহণ হবে। ব্রিটিশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের রিচার্ড মাইলস জানিয়েছেন প্রতি ৭১ বছরে এটি সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করে, কিন্তু ঠিক কী কারণ বশত এটির উজ্জ্বলতা এত বৃদ্ধি পেয়েছে, তা এখনও সন্ধানের বিষয়। মাইলস বলেছেন যে এই ধূমকেতুর পৃষ্ঠে একটা সক্রিয় বরফ আগ্নেয়গিরি থাকতে পারে যা বিচ্ছুরিত হয়ে আকাশকে আলোকিত করছে। তার মতে এটা যথেষ্ট বৈপ্লবিক ধারণা যে ধূমকেতুর ভিতরে তরল রয়েছে যা নিয়ে কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানীরা এখনও কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি।
লাস কামব্রেস অবজারভেটরি, কার্ডিফ, ওয়েলস -এর ডাঃ এডওয়ার্ড গোমেজ জানিয়েছেন, ধূমকেতুগুলো উর্ট ক্লাউড থেকে এসেছে যা নেপচুন এবং ইউরেনাসের কক্ষপথেরও অনেক বাইরে অবস্থান করে। সৌরজগৎ তৈরি হওয়ার পর থেকে ভূ-পদার্থগত প্রক্রিয়া এবং আবহাওয়ার মাধ্যমে সমস্ত গ্রহ ৪.৫ বিলিয়ন বছর ধরে বিবর্তিত হয়ে চলেছে। কিন্তু ওর্ট ক্লাউড আদিম, সৌরজগৎ সৃষ্টির সময় থেকে অবশিষ্ট সব জিনিস দিয়ে এটি গঠিত, এর বিশেষ পরিবর্তন হয় নি। ফলে এটি আমাদের বোঝার একটা দুর্দান্ত সুযোগ দেয়, যে গ্রহগুলো কীভাবে তৈরি হয়েছিল এবং যখন গ্রহগুলি তৈরি হয়েছিল তা কেমন ছিল।