শৈশবে খাবার নিয়ে সচেতন থাকুন

শৈশবে খাবার নিয়ে সচেতন থাকুন

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

পাচনতন্ত্রে প্রদাহ বা ঘা যাকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলে ক্রোনস ডিজিজ এবং বৃহদন্ত্রের গায়ে বা রেকটামে কোনওরকম প্রদাহ বা ঘা যার নাম আলসারেটিভ কোলাইটিস- এই সব প্রদাহজনক অন্ত্রের রোগ বা ইনফ্ল্যামেটরি বাওয়েল ডিজিজ বা আইবিডি (IBD) বৃদ্ধি পাচ্ছে সারা বিশ্বে। কারণের মধ্যে রয়েছে প্রতিদিনের খাদ্যের ধরন যা অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াকে প্রভাবিত করে, প্রভাবিত করে অন্ত্রের মাইক্রোবায়োটা, যা জীবনের প্রথম বছরগুলোতে বিশেষভাবে সংবেদনশীল। কিছু খেলেই পেট ব্যথা করা, খিদেও কমে যাওয়া বা হঠাৎ ওজন কমতে থাকা- এই সমস্ত আইবিডি-র উপসর্গ হতে পারে। বিশ্বজুড়ে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা নেহাত কম নয়।পূর্ববর্তী গবেষণায় প্রাপ্তবয়স্কদের খাদ্যতালিকার ধরন এবং আইবিডির দিকে আলোকপাত করা হয়েছে, কিন্তু শিশুদের খাদ্যাভ্যাস এবং আইবিডি-র সঙ্গে তার যোগাযোগের উপর গবেষণা খুবই কম। গাট জার্নালে প্রকাশিত বর্তমান গবেষণার লক্ষ্য এই এলাকায় দৃষ্টিপাত করা। এই অধ্যয়নে সুইডেন এবং নরওয়েতে বসবাসকারী ৮১,২৮০ জন এক বছর বয়সী শিশুদের খাদ্যতালিকাগত তথ্য অন্তর্ভুক্ত করেছে।
১ থেকে দেড় বছর এবং আড়াই থেকে ৩ বছর বয়সী শিশুদের অভিভাবককে তাদের বাচ্চাদের খাদ্য সম্পর্কে নির্দিষ্ট কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল এবং খাদ্যের গুণমান মূল্যায়ন করে তা বিভিন্ন শ্রেণি যেমন নিম্ন, মাঝারি বা উচ্চ মানের খাদ্যতালিকা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। উচ্চ মানের খাদ্যতালিকার মধ্যে ছিল বেশি করে শাকসবজি, ফল, দুগ্ধজাত খাবার ও মাছ খাওয়া এবং মাংস, মিষ্টি, ভাজাভুজি বা স্ন্যাকস জাতীয় খাবার এবং মিষ্টি পানীয় কম খাওয়া। তাছাড়াও দেখা হয়েছিল যে শিশুরা মায়ের দুধ খায় কিনা বা তাদের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ নেওয়ার প্রবণতা আছে কিনা। গবেষণায় দেখা গেছে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩০৭ জনের আইবিডি ছিল, ১৩১ জনের ক্রোনস রোগ ছিল, ৯৭ জনের আলসারেটিভ কোলাইটিস এবং ৭৯ জনের একটি আনক্লাসিফায়েড আইবিডি ছিল। গবেষণায় আরও উঠে এসেছে যে সব শিশুরা ১ বছর বয়সে বেশি করে মাছ খেয়েছে তাদের অন্যান্য শিশুদের তুলনায় আলসারেটিভ কোলাইটিসের ঝুঁকি ৫৪% কম ছিল আবার ১ বছর বয়সে বেশি পরিমাণে শাকসবজি গ্রহণ করলে দেখা গেছে আইবিডির ঝুঁকি সামগ্রিকভাবে হ্রাস পেয়েছে অন্যদিকে বেশি পরিমাণে মিষ্টি পানীয় খেলে আইবিডির ঝুঁকি ৪২% বৃদ্ধি পেয়েছে। গোথেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশুরোগবিশেষজ্ঞ অ্যানি গুও-এর মতে সম্ভবত জীবনের প্রথম কয়েক বছরের খাদ্যতালিকা বা ডায়েট যা অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমের পরিবর্তনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, আইবিডি বিকাশের ঝুঁকিকে প্রভাবিত করতে পারে।