সমস্যার সমাধান হচ্ছে না? একটু তন্দ্রা যেতে পারেন

সমস্যার সমাধান হচ্ছে না? একটু তন্দ্রা যেতে পারেন

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১২ নভেম্বর, ২০২৪

 

যেতে পারেনঅনেক সময় আমরা রাতে যে সমস্যা সমাধান করতে পারিনা, ঘুমিয়ে ওঠার পর সকালে তা বেশ সহজে সমাধান হয়ে যায়। অনেকে দাবি করেন যে তারা স্বপ্নে যুগান্তকারী আবিষ্কার উদ্ভাবন করেছেন। ঘুমের বিজ্ঞানের ওপর সাম্প্রতিক গবেষণা এগুলো সমর্থন করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিউক ইউনিভার্সিটির গবেষকরা জানান ঘুম আমাদের যুক্তিযুক্ত, সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে পারে। এর জন্য তারা, অংশগ্রহণকারীদের কিছু বাক্স দিয়ে তার মধ্যে পছন্দের বাক্স বাছতে বলেন, সি বাক্সে যত মূল্যবান জিনিস থাকবে, তারা তত টাকা পাবেন। শুরুতে তারা কিছু জিনিস দেখেই তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নেন। রাতে ঘুমিয়ে পরের দিন যখন তারা আবার এই খেলায় অংশ নেন, তখন তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নেন।

যখন আমরা একটি কঠিন সমস্যায় আটকে থাকি, তখন মনে হয় যেন আমরা সমাধান খুঁজে না পেয়ে আটকে আছি। ২০১৯ সালের গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুমের মধ্যে সেই সমস্যা সংক্রান্ত সূত্রগুলো শুনতে পেলে ঘুম থেকে উঠে সমস্যা সমাধান সহজ হয়। ২০২৩ সালের এক অধ্যয়ন জানাচ্ছে, ঘুমের মধ্যে বস্তু এবং ঘটনার মধ্যে সম্পর্ক আবিষ্কার করা যেতে পারে যা আমাদের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে।
টমাস আলভা এডিসন, ইলেকট্রিক বাল্বের আবিষ্কর্তা। তিনি প্রায়ই দিনের বেলা কাজের মাঝে একটু ঘুমিয়ে নিতেন। যদিও রাতে চার ঘণ্টার বেশি ঘুমোনোর তিনি বিপক্ষে ছিলেন। দিনের বেলা ঘুমোনোর সময়, তিনি হাতে একটা বল নিয়ে শুতেন, ঘুমিয়ে পড়লে হাত আলগা হয়ে বল মাটিতে পড়লে, তার আওয়াজে তিনি সজাগ হয়ে উঠতেন। তার বা সালভাদোর দালির মতো বিখ্যাত মানুষরা বলেন, তাদের ঘুম ও সজাগ থাকার মধ্যে এই অবস্থা তাদের সৃষ্টিশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে। ২০২১ সালে ফ্রান্সের গবেষকরা এডিসনের বক্তব্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য একদল অংশগ্রহণকারীকে অঙ্কের ধাঁধা সমাধান করতে দেন, সেই ধাঁধার একটা লুকোনো নিয়ম ছিল। অংশগ্রহণকারীদের হাতে একটা করে তারা কাপ ধরিয়ে দেন। দেখা যায়, অনেকেই এডিসনের মতো নিদ্রা যান। কাপের আওয়াজে যাদের এই তন্দ্রা ভেঙে যায়, তারা, গভীর ঘুমে চলে যাওয়া অংশগ্রহণকারী বা পুরো জেগে থাকা অংশগ্রহণকারীদের তুলনায় সহজে লুকোনো নিয়ম খুঁজে পান। আধো ঘুম আর জাগার এই তন্দ্রাচ্ছন্ন মুহূর্তে অনেকেই হিপ্নোগগিয়া-র কথা বলেন। এটা হল ঘুমোনোর শুরুর দিকে স্বপ্নাদিষ্ট এক দশা। অন্য এক দল গবেষক অংশগ্রহণকারীদের ঘুমোতে যাওয়ার আগে গাছের ওপর তিন ধরনের সৃষ্টিশীল কাজ করতে দেন। দেখা যায় যাদের হিপ্নোগগিয়াতে এই গাছের থিমের ওপর স্বপ্ন আসে, তারা অন্যদের তুলনায় ভালোভাবে কাজ সম্পন্ন করতে পারেন। গবেষকরা তাই মনে করছেন, আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া, সৃষ্টীশীলতা, সমস্যা স্মাধানে ঘুমের একটা বড়ো ভূমিকা রয়েছে।