সমুদ্রের গভীরে এক নতুন প্রাণীর খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা

সমুদ্রের গভীরে এক নতুন প্রাণীর খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

সমুদ্রের তলদেশে প্রায় ১০০০ থেকে ৪০০০ মিটারের অঞ্চলটি গাঢ় অন্ধকারে নিমোজ্জিত থাকে। সারাক্ষণ অন্ধকারের কারণে, এই অঞ্চলটিকে মিডনাইট জোনও বলা হয়। সমুদ্রের এই গভীরতায় যেখানে সূর্যের আলোও পৌঁছায়না সেখানে আলোর একমাত্র দিশা প্রাণী দেহের বায়োলুমিনেসেন্স। প্রাণীদেহে জৈবরাসায়নিক বিক্রিয়ায় আলো নিঃসৃত হবার ঘটনাকেই বায়োলুমিনেসেন্স বা জৈব দ্যুতি বলে। বায়োলুমিনেসেন্ট জীব রাসায়নিক বিক্রিয়াকে কাজে লাগিয়ে তাদের নিজস্ব একটি আভা তৈরি করতে পারে, যা তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজে লাগায়। এই অধ্যয়নে গবেষকরা সমুদ্রের মিডনাইট জোনে একটি নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন: একটি উজ্জ্বল ‘মিস্ট্রি মলাস্ক’ বা নরম দেহী কম্বোজ প্রাণী। আপেলের আকারের সামুদ্রিক স্লাগ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা এই প্রাণীটির নাম ব্যথিডেভিয়াস কড্যাক্টাইলাস। প্রাণীটির দেহে জৈব দ্যুতি রয়েছে, জোনাকির মতো তার শরীর আলোয় জ্বলজ্বল করে। প্রাণীর দেহে একটি প্যাডেলের মতো লেজ এবং একটি বড়ো নরম আঠালো গঠন বা হুড রয়েছে। সাধারণত, সামুদ্রিক স্লাগ সমুদ্রের তলদেশে বা উপকূলীয় পরিবেশে বাস করে, কিছু প্রজাতি ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি খোলা জলে বাস করতে দেখা গেছে, তবে এই ব্যথিডেভিয়াস সমুদ্রের মিডনাইট জোনে বাস করে ।
ব্যথিডেভিয়াস অভিযোজনের মাধ্যমে শরীরে এমন অনেক বৈশিষ্ট্য তৈরি করেছে যা সমুদ্রের ওই অঞ্চলে বসবাসের জন্য উপযোগী। বিজ্ঞানীদের কাছে মিডনাইট জোনের অসীম গভীরতায় বসবাসকারী অনন্য প্রাণীদের বৈশিষ্ট্য বোঝা একটি চ্যালেঞ্জের বিষয়। তারা তাই মনে করছেন ব্যথিডেভিয়াসের অভিযোজন সম্বন্ধে জানলে তারা পৃথিবীর বৃহত্তম আবাসস্থল সম্বন্ধে আরও তথ্য জানতে পারবেন। গবেষণাটি ডিপ সি রিসার্চ পার্ট ১ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − 11 =