সমুদ্রের জল পরিশ্রুত করবে বাংলাদেশী বিজ্ঞানীর প্রযুক্তি

সমুদ্রের জল পরিশ্রুত করবে বাংলাদেশী বিজ্ঞানীর প্রযুক্তি

অর্পন নস্কর
Posted on ২২ জানুয়ারী, ২০২২

পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতলের মধ্যেকার এক রকমের রাসায়নিক উপাদান ব্যাবহার করে সমুদ্রের লবনাক্ত জল নির্লবণাক্ত করে পানের উপযুক্ত কুরে তুলেছে বাংলাদেশী বিজ্ঞানী, জাপানের কিউশু বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্ট ডক্টরাল জেএসপিএস ফেলো ড. রাসেল দাশ, তাঁর সহযোগী সিনিয়ার ইঞ্জিনিয়ার ড. গুরুং শো এবং গবেষকদল। সংশ্লিষ্ট গবেষণাপত্রটি ‘জার্নাল অফ ওয়াটার প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং’ নামে বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
ড. দাশ ও ড. শো পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল থেকে ইলেক্ট্রো-স্পুন প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে একধরনের ন্যানোফাইব্রাস ফিল্টার তৈরি করেছে, যা দিয়ে সমুদ্রের জল ৯৯.৯% নির্লবণাক্তকরণ করা যাবে। এই ধরনের ফিল্টার তৈরির জন্যে অনেক মূল্যবান আর্টিফিশিয়াল পলিমার লাগে। তাই এই প্রযুক্তিতে জল পরিশোধন ব্যয়বহুল। কিন্তু গবেষণা দল মূল্যবান পলিমারের পরিবর্তে প্লাস্টিকের পরিত্যক্ত বোতল থেকে সৃষ্ট এমন এক ধরনের পলিমার ব্যবহার করেছেন যা অনেক সাশ্রয়ী। এতে জলের মোট শোধন ব্যয়ের পরিমাণও কমবে। এঁদের তৈরি ফিল্টারটি প্রতি ঘন্টায় সমুদ্রের জল থেকে ২৫ লিটার পরিশ্রুত পানযোগ্য জল তৈরি করতে সক্ষম।
উল্লেখ্য একুশ শতকে পৃথিবীর ৭০ কোটি মানুষ নিরাপদ জলের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। জাতিসংঘের একটি অনুমান অনুযায়ী ২০২৫ সালের মধ্যে গোটা পৃথিবীর প্রায় ১৮০ কোটি মানুষ পরিশ্রুত জলের সুবিধা বঞ্চিত হবেন। এবং এই সমস্যা সমাধানে রাসেল দাশ গত ৮ বছর ধরে আমেরিকা, মালয়েশিয়া, জার্মানিতে ন্যানো প্রযুক্তি ব্যবহার করে সমুদ্রের জল পরিশুদ্ধির লক্ষ্যে কর্মরত। ড. দাশ জানিয়েছেন বিশ্বের অনেক দেশ যেমন সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, ইসরাইল, সুইডেন, ইউনাইটেড কিংডম, নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স সমুদ্রের জল বিশুদ্ধ করে কৃষি, শিল্প, গার্হস্থ সব খাতেই ব্যবহার করে চাহিদা মেটাচ্ছে। ড. দাশ আরো উল্লেখ করেন বিশ্বজুড়ে প্লাস্টিক দূষণ দূরীকরণ একবিংশ শতাব্দীর জন্যে একটা চ্যালেঞ্জ। সেইসাথে চ্যালেঞ্জ হলো পরিশ্রুত পাণীয় জল তৈরি করা। অলিগলি রাস্থা থেকে শুরু করে বঙ্গোপসাগরের উপকূল পর্যন্ত সব জায়গায় প্লাস্টিকের বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায়। ফলে বোঝা যাচ্ছে নতুন আবিষ্কৃত প্রযুক্তি একই সাথে প্লাস্টিক দূষণের হার কমাবে সাথে পরিশ্রুত পানীয় জল তৈরি করবে তুলনামূলক কম খরচে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 + 3 =