সমুদ্রের নীচে টোঙ্গা আগ্নেয়গিরি থেকে বিস্ফোরণসহ তীব্র অগ্ন্যুৎপাত

সমুদ্রের নীচে টোঙ্গা আগ্নেয়গিরি থেকে বিস্ফোরণসহ তীব্র অগ্ন্যুৎপাত

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক সমীক্ষা অনুসারে, ২০২২ সালে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশ টোঙ্গা থেকে এক ভয়ঙ্কর আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে সুনামির সূত্রপাত হয়েছিল, সমীক্ষা অনুযায়ী এটা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দ্রুততম জলের স্রোতের রেকর্ড । নিমজ্জিত হুঙ্গা টোঙ্গা-হুঙ্গা হাপাই আগ্নেয়গিরি গত বছরের জানুয়ারিতে প্রতি ঘন্টায় ১২২ কিলোমিটার বেগে সমুদ্রতল জুড়ে পাথর, ছাই এবং গ্যাস ছড়িয়েছিল। সমীক্ষা থেকে এই গবেষণাপত্র সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
আধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে রেকর্ড করা গেছে যে অত্যন্ত শক্তিশালী এই অগ্ন্যুৎপাত মারাত্মক সুনামি এবং অ্যাভালাঞ্চের তুষারপাতের মতো পদার্থের প্রবাহ সৃষ্টি করেছে, এর ফলে জলের নিচে টেলিযোগাযোগ তারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে, বিশ্বের বাকি অংশের সাথে টোঙ্গার সংযোগ নষ্ট করে। ব্রিটেনের ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফি সেন্টার (এনওসি) এর বিজ্ঞানীদের নেতৃত্বে একটি গবেষণা দল অগ্ন্যুৎপাতের গতি নির্ণয় করার জন্য তারের অবস্থান ও সেগুলোর ক্ষতির সময় নিরীক্ষণ করেছেন।
এনওসি-র মাইক ক্লেয়ার ব্যাখ্যা করেছেন, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের নির্গমন, ৫৭ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত উঠেছিল, তারপর সরাসরি জলে বা জলের নীচের খাড়া ডুবো ঢালে গিয়ে পড়েছিল। স্রোতের গতি এবং শক্তি এতটাই বেশি ছিল যে তা সমুদ্রতল জুড়ে কমপক্ষে ১০০ কিলোমিটার ছড়িয়ে পড়েছিল আর তারগুলো ধ্বংস করে দিয়েছিল। ভূমিকম্প, বন্যা বা ঝড়ের তুলনায় এই প্রবাহের গতি বেশি ছিল সমীক্ষায় জানানো হয়েছে।
এনওসি-র আগ্নেয়গিরিবিদ এবং গবেষণার যৌথ-প্রধান বিজ্ঞানী আইসোবেল ইয়ো বলেছেন, সমুদ্রের নীচে অনেক আগ্নেয়গিরি আছে কিন্তু মাত্র কিছু আগ্নেয়গিরি পর্যবেক্ষণ করা হয়, যার অর্থ হল উপকূলীয় সম্প্রদায় এবং তৎসংলগ্ন পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে যথেষ্ট ঝুঁকি থেকে যায়। এক্ষেত্রে ভূমিতে অগ্ন্যুৎপাতের লাভা, আগ্নেয়গিরির ছাই, ধোঁয়া উদ্গিরন হয়েছিল যা পাইরোক্লাস্টিক প্রবাহ নামে পরিচিত। এই অধ্যয়নটিতে প্রথম নথিভুক্ত করা হয়েছে প্রচুর পরিমাণে অগ্ন্যুৎপাত হয়ে আগ্নেয়গিরির উপাদান সরাসরি সমুদ্রে উন্মুক্ত হয়ে কী হয়েছিল। হুঙ্গা টোঙ্গা-হুঙ্গা হাপাই অগ্ন্যুৎপাতের শক্তি শত শত পারমাণবিক বোমার সমতুল্য ছিল, এর ফ্স্বলরূপ সুনামিতে অন্তত তিনজন মানুষ মারা যান এবং টোঙ্গার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়। বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে এই অগ্ন্যুৎপাতের ফলে বায়ুমণ্ডলে রেকর্ড উচ্চতায় ধ্বংসাবশেষ বিস্ফোরিত হয়েছে। যার ফলাফল আরো ভয়াবহ।