এত বিজ্ঞাপন, দোকানে থরে থরে সাজানো কাপড় কাচার সাবান বা ডিটারজেন্টের ভিড়ে অনেকসময় আমরা ভেবে উঠতে পারিনা কোন কাপড় কাচার সাবান আমাদের কেনা উচিত। সব ডিটারজেন্টই কম বেশি আমাদের কাপড় জামা পরিষ্কার করে, তবে কেনার সময় আমাদের মাথায় বিভিন্ন প্রশ্ন ঘোরে। আমাদের জামাকাপড় পরিষ্কার হবে তো? সাদা কাপড়গুলো সাদা থাকবে তো, লালচে হয়ে যাবে না তো? সাবানের গুড়ো কিনবো না তরল ডিটারজেন্ট ভালো হবে? এসব প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আগে জানতে হবে সাবানের সাথে জড়িত রসায়ন?
কাপড় কাচার পাউডার এবং তরল উভয় ক্ষেত্রেই সক্রিয় উপাদান হল সার্ফ্যাক্ট্যান্ট, যা ডিটারজেন্ট নামেও পরিচিত। সাধারণত এগুলো চার্জযুক্ত বা ‘আয়নিক’ অণু যার গঠনের দুটি স্বতন্ত্র অংশ রয়েছে। একটি অংশ জলের সাথে মিথষ্ক্রিয়া করে আর অন্যটি তেলের সাথে। কাপড়ের তেল ময়লা তুলতে এটি সাহায্য করে তাছাড়াও সার্ফ্যাক্ট্যান্ট বুদবুদ তৈরি করে। জলে দ্রবীভূত ধাতব লবণ সার্ফ্যাক্ট্যান্টের কর্মক্ষমতা সীমিত করতে পারে। খর জলে প্রচুর পরিমাণে দ্রবীভূত ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম লবণ থাকে যা সহজেই সাবানের গুড়ো গুড়ো ময়লা তৈরি করতে পারে। তাই আজকাল লন্ড্রি ডিটারজেন্টে ফসফেট, ওয়াটার সফ্টনার এবং অন্যান্য আরও কিছু পদার্থ থাকে যা সাবানের ময়লা তৈরি হতে দেয় না। অনেক ডিটারজেন্টে অপটিক্যাল ব্রাইটনারও থাকে। এই রাসায়নিক অতিবেগুনি আলো শোষণ করে এবং নীল আলো প্রতিফলিত করে যা কাপড়জামার সাদা রঙ বা উজ্জ্বল রঙের কারণ। তাছাড়াও লন্ড্রি ডিটারজেন্টে সুগন্ধি থাকে যা কাপড়জামায় ভালো গন্ধ দেয়। ডিটারজেন্ট পাউডারের প্রধান উপাদান হল লবণ যেমন সোডিয়াম সালফেট, যা পাউডারকে জমাট বাঁধাতে দেয় না। তাছাড়াও থাকে সোডিয়াম কার্বনেট, যা ওয়াশিং সোডা নামেও পরিচিত। ওয়াশিং সোডা তেল, ময়লা তুলতে সাহায্য করে এবং সেগুলো জলে দ্রবীভূত করে। সাবান গুড়ো হোক বা তরল তাদের নিজস্ব সুবিধা অসুবিধা দুই আছে। যেমন তরল সাবানে ব্লিচিং এজেন্ট পারক্সাইড থাকে না। পারক্সাইড জীবাণু মেরে ফেলতে সাহায্য করে। তাই তরল ডিটারজেন্টের ক্ষেত্রে কাপড় কাচার মেশিনে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে যা পরবর্তী ক্ষেত্রে কাপড়জামায় সংবাহিত হতে পারে। তাই নিজের চাহিদা, অর্থ বুঝে নিজেকেই সঠিক জিনিস খুঁজে নিতে হবে।