সামাজিক প্রাণীরা বেশিদিন বাঁচে

সামাজিক প্রাণীরা বেশিদিন বাঁচে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১ নভেম্বর, ২০২৪

আমরা যত সামাজিক হব আমাদের ভালো থাকার সম্ভাবনা তত বাড়তে পারে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় সামাজিকতার সাথে বিভিন্ন প্রাণীজীবনের বৈশিষ্ট্য তুলনা করে দেখা হয়েছে। জেলিফিশ থেকে শুরু করে মানুষের ওপর গবেষণায় প্রাণীদের প্রজন্মের সময়কাল, আয়ুষ্কাল এবং তাদের প্রজনন ক্ষমতা কত দীর্ঘ সময় থাকে তার ওপর মূল্যায়ন করা হয়েছে। এতদিন অবধি কর্মক্ষমতার ওপর সামাজিকতার সামগ্রিক প্রভাবের মূল্যায়ন নিয়ে গবেষণায় কিছু পাখি বা স্তন্যপায়ীর ওপর অধ্যয়নের তথ্য ছিল। বর্তমান গবেষণায় পাখি, স্তন্যপায়ী প্রাণী, পোকামাকড় এবং প্রবাল সহ বিস্তৃত গোষ্ঠীর ১৫২ টা প্রাণী প্রজাতির মূল্যায়ন করা হয়েছে। সমীক্ষার ফলাফল বলছে যে প্রজাতি যত বেশি সামাজিক, সেই প্রজাতি তত বেশি দিন বাঁচে, তাদের পরিপূর্ণতা দেরিতে আসে। একা বাস করা প্রজাতির তুলনায় তাদের সফলভাবে প্রজনন করার সম্ভাবনা বেশি। এই সামাজিক প্রজাতিগুলো দ্রুত পরিবর্তিত পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার উপযুক্ত না হলেও, তারা প্রায়শই একটা গোষ্ঠী হিসেবে থাকার জন্য সুবিধা পায়। সামাজিকতা অনেক প্রাণীর প্রাথমিক বৈশিষ্ট্য। দেখা গেছে যে সমস্ত প্রাণী বেশি সামাজিক, তাদের আয়ুষ্কাল ও প্রজনন ক্ষমতা অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ। এদের মধ্যে বেশিরভাগ বানরজাতীয় প্রজাতি, মানুষ, হাতি, ফ্লেমিঙ্গো, পায়রা পড়ে। যে সমস্ত প্রাণীরা একা জীবন কাটায় তাদের মধ্যে রয়েছে কিছু পতঙ্গ, কিছু মাছ ও সরীসৃপ।
সামাজিকতার ক্ষেত্রে কিছু অসুবিধা অবশ্যই রয়েছে – যেমন রোগ সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, খাদ্য ও সম্পদের জন্য প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়, হিংসা, মারামারিও দেখা যায়। কিন্তু এর সুবিধাগুলো বিশেষ উল্লেখযোগ্য, সম্পদ ভাগাভাগি করে বাস করা, দলে বাস করলে শিকারীদের থেকে সহজে আত্মরক্ষা, গোষ্ঠীতে বসবাস করলে সন্তান বড়ো করতেও সাহায্য পাওয়া যায়। কোভিড পরবর্তী সময়ে আমরা আলাদা আলাদাভাবে বাস করে বেশ সুবিধা উপভোগ করলেও, গবেষণা বলছে সামাজিকভাবে একত্রে থাকা আমাদের অনেক বেশি সুবিধা দেয়।