
১৯৬৩ সালে জাম্বিয়ায় খনন করে পাওয়া গিয়েছিল এক ধূলোমাখা পায়ের হাড়। যেটা দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রহশালার আলমারিতে অবহেলিত ভাবে পড়েছিল। সেটিই এখন বিজ্ঞানীদের মনে ধারণা জাগিয়েছে যে, প্রাচীন ডাইনোসরদের আকার হয়তো আগে যা ভাবা গিয়েছিল তার চেয়েও বড় ছিল। এই ২২৫ মিলিয়ন বছরের পুরনো জীবাশ্মটি সিলিসর নামে পরিচিত এক প্রাচীন সরীসৃপ গোষ্ঠীর অন্তর্গত, যা ডাইনোসরের পূর্বপুরুষ হতে পারে।
সিলিসর এবং প্রাথমিক ডাইনোসরদের (যেমন Herrerasaurids) অসম্পূর্ণ জীবাশ্মগুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে, তাদের আকার হয়তো আগে যা ভাবা গিয়েছিল তার চেয়েও বড় । ফলে ধারণা করা হচ্ছে, ডাইনোসররা প্রথমে বড় ছিল, পরে আকারে ছোট হতে শুরু করে।
সিলিসরদের নিয়ে দ্বিধা ছিল, তারা আসলেই ডাইনোসর নাকি শুধু ঘনিষ্ঠ আত্মীয়? অবশেষে ২০১০ সালে সিলিসরদের আলাদা গোষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। তাদের একটি নীচের চোয়ালের দাঁতহীন অংশটি ডাইনোসরের এক শ্রেণি অর্নিথিস্কিয়ানদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক স্থাপন করেছে।
গবেষকরা পুরনো সংগ্রহশালার সংগ্রহে থাকা জীবাশ্মগুলো নতুন করে পর্যবেক্ষণ করছেন। এই গবেষণার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা হাড়টি লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে অবহেলিত হয়ে পড়েছিল।
জাম্বিয়ার জীবাশ্মগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সেখানে একাধিক সিলিসর প্রজাতি থাকা সম্ভব। তাদের আকারও আগে যা ভাবা গিয়েছিল তার থেকে অনেক বড় হতে পারে। এই বড় সিলিসররা সম্ভবত পরিবেশ রক্ষায় প্রধান ভূমিকা পালন করত এবং পুষ্টিচক্রেও তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
গবেষণাটি ইঙ্গিত দিচ্ছে, সিলিসররা হয়তো শুধু আকারেই বড় ছিল না, বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং পরিবেশে প্রভাবশালীও ছিল। এমনকি তারা ডাইনোসরের প্রাথমিক রূপও হতে পারে।
সবশেষে, গবেষকরা বলছেন কখনও কখনও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারগুলো সংগ্রহশালার তাকেই বসে থাকে, কারোর সচেতন দৃষ্টির অপেক্ষায়।
সূত্র: Royal Society Open Science Journal, 20.7.2025.