সূর্যের আলোয় সান অ্যালার্জি

সূর্যের আলোয় সান অ্যালার্জি

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৪ এপ্রিল, ২০২৪

রোদে দীর্ঘক্ষণ থাকার ফলে পুড়ে যেতে পারে ত্বক হতে পারে ত্বকের ক্যান্সার সহ বেশ কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা। কিন্তু সান অ্যালার্জি হতে পারে কী? হ্যাঁ, সূর্য থেকে নির্গত অতিবেগুনি রশ্মির প্রতি ত্বকে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। সান অ্যালার্জি থেকে ত্বকে চুলকানি, ফুসকুড়ি হয় যা ত্বকে লাল দাগ বা ছোপ, ফোসকা বা অ্যালার্জি তৈরি করে। সূযের অতিবেগুনী রশ্মির ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে যাকে সান অ্যালার্জি নামের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই অ্যালার্জি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জিনগত বৈশিষ্ট্যের কারণে হতে পারে আবার কিছু ক্ষেত্রে ওষুধ বা প্রসাধন সামগ্রী থেকে কিছু রাসায়নিকের প্রতিক্রিয়াতে শরীরে দেখা যেতে পারে।
পলিমর্ফাস লাইট ইরাপশন (PMLE) সান অ্যালার্জির খুব সাধারণ একটি ধরন। বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ১ জনের এই অ্যালার্জি হতে পারে, তবে এটি পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে বেশি করে দেখা যায় বলে জানিয়েছে জার্নাল অফ দি ইউরোপিয়ান একাডেমি অফ ডার্মাটোলজি অ্যান্ড ভেনারোলজি। এই ধরনের লাইট ইরাপশন বা অ্যালার্জি সাধারণত দু ঘন্টা বা তার বেশি সূর্যের আলোতে থাকলে হতে পারে। এই অবস্থাটি সাধারণত পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের বেশি প্রভাবিত করে এবং এর লক্ষণগুলো প্রায়শই বয়ঃসন্ধির সময় দেখা দেয়। একেক জনের শরীরে এই র‌্যাশ একেক রকম দেখায় বলে একে পলিমর্ফাস বলা হয়। কিছু বিরল ক্ষেত্রে, PMLE বংশগত হতে পারে। অ্যাক্টিনিক প্রুরিগো নামে পরিচিত এই সান অ্যালার্জি প্রধানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর, দক্ষিণ এবং মধ্যবর্তী অঞ্চলে আমেরিকান জনসংখ্যাকে প্রভাবিত করে। সান অ্যালার্জির আরেকটি ধরন হল ফটোঅ্যালার্জিক ইরাপশন যা সাধারণত সূর্যালোক এবং ত্বকে ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া দ্বারা উদ্ভূত হয়। ফোস্কা ফুসকুড়ির মতো এই অ্যালার্জি এক বা দু দিনের মধ্যে দেখা দিতে পারে এবং ত্বকের এমন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে যেগুলো সূর্যের সংস্পর্শে আসেনা। ফটোঅ্যালার্জিক ইরাপশন সব ধরনের ত্বকের মানুষের মধ্যে দেখা যেতে পারে, তবে যে ব্যক্তির ত্বক সূর্যের আলোর প্রতি বেশি সংবেদনশীল তাদের লক্ষণগুলো তাড়াতাড়ি দেখা যায়। শরীরে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের সুগন্ধি, প্রসাধনী অথবা সানস্ক্রিনের একটি উপাদান বেনজোফেনোনস বা অন্যান্য কৃত্রিম রাসায়নিকের কারণে ফটোঅ্যালার্জিক ইরাপশন ঘটতে পারে। কিন্তু কিছু প্রাকৃতিক পদার্থ, যেমন চুনের রসের কারণেও এই ধরনের অ্যালার্জি দেখা যেতে পারে। কিছু নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক, যেমন টেট্রাসাইক্লিন এবং সিপ্রোফ্লক্সাসিন; সালফার-ভিত্তিক ওষুধ, যেমন হাইড্রোক্লোরোথিয়াজাইড; এবং ব্রণ চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত ওষুধ আইসোট্রেটিনয়েন সহ বেশ কিছু ওষুধ থেকেও ত্বকে অ্যালার্জি হতে পারে। সান অ্যালার্জির আরেকটি ধরন হল সোলার আর্টিকেরিয়ায় এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ত্বকে আমবাত ও ফুসকুড়ি দেখা দেয়। গবেষকদের মতে যে কোনো ব্যক্তির যে কোনো সময়ে সান অ্যালার্জি দেখা যেতে পারে এবং দুর্ভাগ্যবশত, এই অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া সময়ের সাথে বিকাশ লাভ করতে পারে।