সূর্যের উপর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিখা ফুটে উঠছে

সূর্যের উপর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিখা ফুটে উঠছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

সোলার অরবিটার মহাকাশযান মহাকাশের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় সূর্যের বায়ুমণ্ডলে, তার দক্ষিণ মেরুর কাছে হঠাৎ একটি “গর্ত” দেখতে পায়। যদিও সত্যি সত্যি এটা কোনো গর্ত নয়, বরং একটা ‘করোনাল হোল’–অর্থাৎ সূর্যের বাইরের বায়ুমণ্ডলের একটি জায়গা যেখানে তাপমাত্রা কমে গেছে। এই “ঠান্ডা” জায়গাটা সূর্যের বাকি অংশের মতো উজ্জ্বল নয়, আর তাই ছবিতে তাদের একটি গভীর কালো গর্তের মতো দেখায়।
সোলার অরবিটারটি প্রথম দেখতে পায় যে এই করোনাল হোলের চারপাশে ছোটো ছোটো অগ্নিশিখা সর্বত্র ফুটে উঠছে। প্লাজমার এই উজ্জ্বল উৎসরিত ফিনকির মতো আলো প্রতিটি প্রায় কয়েকশো কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ২০ থেকে ১০০সেকেন্ড পরে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি থেকে বহু গুণ শক্তি নির্গত হয় যার পরিমাণ ৩০০০ থেকে ৪০০০ মার্কিন পরিবারের শক্তি গ্রহণের সমতুল্য। নেচার পত্রিকায় এমন কথাই বলেছেন সৌর পদার্থবিদ লক্ষ্মী প্রদীপ চিত্ত। বিজ্ঞানীরা যে সৌর শিখা আগে দেখেছে তার তুলনায় এটি কিছুই নয়। তিনি আরও বলেন যে সবচেয়ে বড়ো ধরনের সৌর বিস্ফোরণকে এক্স-ক্লাস ফ্লেয়ার বলা হয়, যা একশো কোটি হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য শক্তি নির্গত করে। স্পেকট্রামের অন্য প্রান্তে থাকা ন্যানো-ফ্লেয়ারের তুলনায় এর শক্তি একশো কোটি গুণ বেশি। নতুন আবিষ্কৃত এই ফ্লেয়ার বা আগুনের শিখায় একটি ন্যানোফ্লেয়ারের চেয়ে ১০০০ গুণ কম শক্তি রয়েছে তাই সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণায় বিজ্ঞানীরা তাদের নাম দিয়েছেন “পিকোফ্লেয়ার”। যেহেতু এই পিকোফ্লেয়ার করোনাল হোলের সমস্তটা জুড়ে ছিল, গবেষকরা তাই অনুমান করছেন যে এই পিকোফ্লেয়ার সূর্যের বাকি অংশেও রয়েছে। বিজ্ঞানীরা আরও অনুমান করছেন যে পিকোফ্লেয়ার সৌর বায়ু ঝড়ের উৎস হতে পারে যা পৃথিবীতে প্রভাব ফেলছে। এর ফলে পৃথিবীতে রেডিও সংকেত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, পাওয়ার গ্রিডগুলো কার্য ক্ষমতা হারাচ্ছে এমনকি উপগ্রহকে তাদের কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত করছে।