সূর্যের বিস্ফোরণ!

সূর্যের বিস্ফোরণ!

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৪ এপ্রিল, ২০২২

ফের বিস্ফোরিত হয়েছে সূর্য (Sun)। আজকাল অত্যন্ত সক্রিয় হয়ে উঠেছে আমাদের সৌরমণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র। আর এই সক্রিয়তার কারণ সূর্যের নতুন সোলার সাইকেল (New Solar Cycle) ক্রমাগত বিধ্বংসী হয়ে উঠেছে। এর প্রভাবে সূর্যের বহির্ভাগ অর্থাৎ করোনা অংশ থেকে একটি Coronal Mass Ejection হয়েছে। এটি পৃথিবীর দিকে যাচ্ছে। তার ফলে বিজ্ঞানীরা সৌরঝড়ের সতর্কতা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ৩১ মার্চ পৃথিবীরে আছড়ে পড়তে পারে একটি জিওম্যাগনেটিক স্টর্ম বা ঝড়। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন এই জিওম্যাগনেটিক স্টর্ম হতে পারে প্রতি ঘণ্টায় ২১,৮৫,২০০ কিলোমিটার গতিবেগে। ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের দ্য সেন্টার অফ এক্সলেন্স ইন স্পেস সায়েন্সেস- এর তরফে অনুমান করা হয়েছে যে শক্তি এবং প্লাজমার একটি শক্তিশালী পৃথিবীকে বৃহস্পতিবার আঘাত করবে।
করোনাল মাস ইজেকশন হল সূর্যের পৃষ্ঠদেশ থেকে নির্গত সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী বিস্ফোরণ। সূর্যের এই বিস্ফোরণ বা অগ্ন্যুৎপাতের ফলে যে ইজেকশ হয় তা এক বিলিয়ন টন পদার্থকে প্রতি ঘণ্টায় মহাকাশের কয়েক লক্ষ মাইল পথ পাঠাতে পারে। ইন্টারপ্ল্যানেটরি মাধ্যমের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয় এই সোলার মেটেরিয়াল স্ট্রিম বা সৌর উপাদানের স্রোত যা তার আশপাশে থাকা অথবা প্রবাহের পথে আসা যেকোনও গ্রহ অথবা মহাকাশযানের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। যখন একটি শক্তিশালী করোনাল মাস ইজেকশন পৃথিবীর পাশ দিয়ে বয়ে যাত, তখন সেটি আমাদের স্যাটেলাইটে থাকা ইলেকট্রনিক্সকে ব্যাহত করতে পারে এবং পৃথিবীরে রেডিয়ো কমিউনিকেশন নেটওয়ার্কও ব্যাহত হতে পারে।
জানা গিয়েছে, সূর্যের সক্রিয় অঞ্চল ১২৯৭৫ এবং ১২৯৭৬ থেকে এই সৌর শিখা নির্গত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই সৌর শিখা পৃথিবীরে চৌম্বকীয় ক্ষেত্রে আঘাত করলে সেখানে করোনাল মাস ইজেকশনের প্রভাবে মাঝারি জিওম্যাগনেটিক স্টর্ম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ৩১ মার্চ তীব্র গতিতে, প্রতি সেকেন্ডে ৪৯৬ থেকে ৬০৭ কিলোমিটার বেগে এই জিওম্যাগনেটিক ঝড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এর পাশাপাশি CESSI এও জানিয়েছে যে সূর্যের পৃষ্ঠদেশে অনেক সানস্পট তৈরি হয়েছে যেগুলি আগামী দিনে আরও বেশি সংখ্যক সৌর শিখা তৈরি করতে পারে।
তবে এটাই প্রথম নয় যে জিওম্যাগনেটিক স্টর্ম পৃথিবীতে আছড়ে পড়বে। আগেও এমনটা হয়েছে। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, ইদানীং মহাকাশের আবহাওয়া সংক্রান্ত বিভিন্ন ইভেন্টের সংখ্যা তুলনায় বেড়ে গিয়েছে। কারণ সূর্যের নতুন সৌরচক্র শুরু হয়েছে। এর ফলে অত্যন্ত সক্রিয় রয়েছে সূর্য। বৃহস্পতিবার যে জিওম্যাগনেটিক স্টর্মের কথা বলা হচ্ছে তার প্রভাব অরোরা অঞ্চলেই পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। নিম্ন উচ্চতা থেকেও এই ঝড়ের প্রভাব বোঝা যাবে বলে শোনা যাচ্ছে। এছাড়াও পাওয়ার গ্রিড এবং কমিউনিকেশন নেটওয়ার্কের উপর প্রভাব পড়তে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।