
শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করার জন্য শুধুমাত্র স্কুলে স্মার্টফোন নিষিদ্ধ করাই হয়তো যথেষ্ট নয়। ‘লানসেট রিজিওনাল হেলথ ইউরোপে’ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে , ৩০টি স্কুলের ১,২২৭ জন শিক্ষার্থীকে পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে ২০টি স্কুলে ফোন ব্যবহারে বিধিনিষেধ ছিল। বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর এবং গবেষণার প্রধান লেখক ডঃ ভিক্টোরিয়া গুডইয়ার এ প্রসঙ্গে বলেন, “কিশোর বয়সে, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং শিক্ষার ফলাফল নিয়ে গবেষণা এই প্রথম।”
অনুমতিপ্রাপ্ত এবং নিষেধাজ্ঞাযুক্ত উভয় স্কুলের সকল শিক্ষার্থীদের মধ্যে, আগে থেকেই স্মার্টফোন ব্যবহার ছিল গড়ে প্রতিদিন ৪-৬ ঘণ্টা। গবেষণায় দেখা গেছে, ফোন নিষিদ্ধ থাকা এবং না-থাকা স্কুলগুলোর মধ্যে তেমন উল্লেখযোগ্য পার্থক্য নেই । মানসিক স্বাস্থ্য (উদ্বেগ ও বিষণ্ণতা), শারীরিক কার্যকলাপ, ঘুমের প্যাটার্ন, ইংরেজি ও গণিতে তাদের শিক্ষাগত কৃতিত্ব এবং ক্লাসরুম-আচরণে এদের মধ্যে বিশেষ কোনো তফাৎ আসেনি। ফোন ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞাযুক্ত স্কুলগুলিতে ফোন ব্যবহার (প্রায় ৪০ মিনিট) এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার (প্রায় ৩০ মিনিট) কমেছে ঠিকই। তবে, ফোন ব্যবহারের সময় কমে যাওয়াটা তাদের সামগ্রিক ব্যবহারের ধরনে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলার জন্য যথেষ্ট ছিল না। গবেষণায় বলা হয়েছে , ফোন ও সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যপক ব্যবহারের সাথে তার ‘নেতিবাচক ফলাফল’ এর একটি সম্পর্ক রয়েছে। যেমন, খারাপ মানসিক স্বাস্থ্য, শারীরিক কসরত কম হওয়া, নিম্নমানের ঘুম, শিক্ষায় মনোযোগ কমে যাওয়া ইত্যাদি। তবে, ডঃ ভিক্টোরিয়া গুডইয়ার ব্যাখ্যা করে বলেছেন যে, এই সমস্যা সমাধানের জন্য শুধুমাত্র স্কুলের ভিতরে নয়, স্কুলের বাইরেও, অর্থাৎ সামগ্রিক সময় জুড়েই ‘ফোন ব্যবহার’ নিয়ে বিবেচনা করতে হবে। সেক্ষেত্রে আরও একটি ব্যাপক পদ্ধতিমূলক-গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। এই গবেষণায়, প্রফেসর মিরান্ডা পাল্লান এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য উন্নত করার জন্য সামগ্রিকভাবে ফোন ব্যবহার কমানো প্রয়োজন। শুধুমাত্র স্কুলে বিধিনিষেধ মেনে এই ধরণের সমস্যার কার্যকর সমাধান মিলবে না।
সমস্যাটা খুবই কঠিন। এ থেকে রেহাই পাওয়ার পথ কী?