কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃথিবী বিখ্যাত তাত্ত্বিক পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং এর অফিস ঘরের নানা সামগ্রী নিয়ে ইংলন্ডের সায়েন্স মিউজিয়াম অব লণ্ডনে গত ১০ ই ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে প্রদর্শনী। চলবে জুন পর্যন্ত। প্রদর্শনীতে রয়েছে এতদিন অনেক বিখ্যাত বিজ্ঞানীরও অগোচরে থাকা দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে হকিংয়ের নিজের ঘরে ঢাউস ব্ল্যাকবোর্ড জুড়ে আঁকা একের পর এক কাল্পনিক ছবি, বহু জটিল সমীকরণ, চকের অক্ষরে লেখা রহস্যে মোড়া অনেক শব্দগুচ্ছ- এসবের মধ্যেই আছে স্বপ্নদর্শী হকিংয়ের ব্রম্ভাণ্ড সম্পর্কিত নানা ভাবনার চিন্তা-চিহ্ন গুলি। হকিংয়ের ঐ বিখ্যাত ব্ল্যাকবোর্ডে এমন বহু গাণিতিক সমীকরণ লেখা আছে যার জট খোলা সম্ভব হলে হয়তো ব্রম্ভাণ্ডের অনেক অজানাকে জানা যাবে। উল্লেখ্য হকিং এর এই বিখ্যাত ব্ল্যাকবোর্ড এতদিন বহু বিখ্যাত বিজ্ঞানী গবেষক, এমনকি হকিংয়ের প্রিয় ঘনিষ্ঠ অনেক ছাত্রদেরও দেখার সুযোগ হয়নি। এবার মিলবে সে ছাড়পত্র।
প্রদর্শনীতে আরো থাকবে তাঁর পিএইচডি করাকালে ‘ব্রম্ভাণ্ডের উত্তরোত্তর বিপুল গতিতে চতুর্দিকে ফুলে ফেঁপে বৃহৎ হয়ে ওঠা’ নিয়ে যে গবেষণাপত্রটি লিখেছিলেন সেই গবেষণাপত্রটিও। থাকবে বিখ্যাত হুইলচেয়ার। প্রদর্শনী শেষে হকিংয়ের সমস্ত সামগ্রী নিয়ে যাওয়া হবে ব্রিটেনের অন্যান্য মিউজিয়ামে।
তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যার দুই প্রতিদ্বন্দ্বী শাখা জেনারেল রিলেটিভিটি ও কোয়ান্টাম মেকানিক্স কে এক সুতোয় বাঁধার প্রচেষ্টা ছিল হকিংয়ের আমৃত্যু আকাঙ্খ। হকিং বিশ্বাস করতেন এই দুই আপাত বিপ্রতীপ তত্ত্ব এক সুতোয় বাঁধা পড়লে ব্রম্ভাণ্ডের সকল রহস্যের জট খুলে যাবে। জানা যাবে ১৪০০ কোটি বছর আগে কীভাবে ঘটলো বিগ ব্যাং- তারপরের ব্রম্ভাণ্ড তৈরির প্রক্রিয়াগুলিও। এই বিশাল ব্রম্ভাণ্ডের পরিনতিই বা কী! ব্রম্ভাণ্ড সম্পর্কিত তাঁর তত্ত্বভিত্তিক বই ‘থিওরি অফ এভরিথিং’ এ সম্পর্কিত একটি বহুল পরিচিত বই।
প্রথমবার প্রদর্শনীর মাধ্যমে হকিংয়ের নানা জটিল চিন্তা সূত্র উপস্থিত হবে পৃথিবীর অনেক মনীষাদের সামনে। ব্রম্ভাণ্ড ব্যাখ্যার সার্বিক তত্ত্বের ইঙ্গিত কী দিতে পারবেন কেউ হকিংয়ের তত্ত্বভিত্তিক কল্পনার জট ছিঁড়ে?