হতাশা ও শরীরের তাপমাত্রার মধ্যে যোগসূত্র আছে?

হতাশা ও শরীরের তাপমাত্রার মধ্যে যোগসূত্র আছে?

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

প্রায়ই মন খারাপ থাকছে, কিছু ভালো না লাগা ঘিরে থাকছে, মনের মধ্যে দুঃখ, উদ্বেগ, একাকীত্ব? এ সবই হতাশা, বিষণ্ণতার লক্ষণ। বিশ্বজুড়ে মানুষের মনে বিষণ্ণতা থাবা বসাচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়া সান ফ্রান্সিসকো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটা দল সাত মাসের মধ্যে সংগৃহীত ২০৮৮০ জন ব্যক্তির কাছ থেকে তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন, যেখানে দেখা গেছে যারা বিষণ্ণতা, হতাশায় আক্রান্ত তাদের শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকে। ১০৬টা দেশের অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে এই অধ্যয়ন, শরীরের উচ্চ তাপমাত্রা বিষণ্ণতা সৃষ্টি করে, বা প্রকৃতপক্ষে বিষণ্ণতা শরীরের উষ্ণতা বৃদ্ধির দিকে নিয়ে যায় সেই উপসংহারে পৌঁছোতে পারেনি, কিন্তু এই দুটোর মধ্যে কোনো সম্পর্ক আছে বলে তারা মনে করছেন। বিষণ্ণতাকে আরও ভালভাবে চিকিত্সা করতে এবং প্রতিরোধ করার জন্য, গবেষকদের মস্তিষ্ক এবং শরীরের সম্পর্ক বুঝতে হবে। এই অধ্যয়ন হতাশাজনক উপসর্গ এবং শরীরের তাপমাত্রার মধ্যে যোগসূত্র চিহ্নিত করেছে। গবেষকরা জানিয়েছেন এই সংযোগ আরও ভালোভাবে অধ্যয়ন করা প্রয়োজন। যদি ঠান্ডা রাখার মতো সহজ কিছু কাজ হতাশার লক্ষণ মোকাবিলা করতে সাহায্য করতে পারে, তবে বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
শরীরের তাপমাত্রার মধ্যে সম্পর্ক পরীক্ষা করার জন্য এটি এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড়ো সমীক্ষা, ভৌগোলিকভাবে বিস্তৃত এই নমুনায় হতাশাজনক লক্ষণ, স্ব-প্রতিবেদন অর্থাৎ অংশগ্রহণকারীর বক্তব্য এবং পরিধানযোগ্য সেন্সর ব্যবহার করে তাপমাত্রা মাপা হয়েছে। বিষণ্ণতার সাথে বিপাকীয় প্রক্রিয়াগুলির যোগ থাকতে পারে, যেখানে অতিরিক্ত তাপ উৎপন্ন হতে পারে, বা এমন জৈবিক কর্মের সাথে যুক্ত থাকতে পারে যাতে শরীর শীতল হয়, কিন্তু তা সঠিকভাবে কাজ করছে না। অথবা মানসিক চাপ বা প্রদাহ থেকে শরীরের তাপমাত্রা এবং হতাশাজনক লক্ষণ উভয়ই বৃদ্ধি পেতে পারে। পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখা গেছে যে গরম বাথটাবে স্নান বা সওনা বাথ হতাশার লক্ষণ কমিয়ে দিতে পারে। ঘামের মাধ্যমে যে শরীর ঠাণ্ডা হওয়ার যে সূত্রপাত হয় তাতেও মানসিক প্রভাব পড়ে। বিশ্বের প্রায় ৫ শতাংশ মানুষ হতাশা নিয়ে বসবাস করছে, তাই এবিষয়ে বোঝা এর কার্যকর চিকিত্সা পদ্ধতি খুঁজে বের করতে সাহায্য করবে। এজন্য শরীরের কোন দিকের সাথে বিষয়টা কীভাবে যুক্ত হতে পারে তা বিশ্ব জুড়ে গবেষকরা দেখার চেষ্টা করে চলেছেন। সায়েন্টিফিক রিপোর্টস এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 2 =