হরিয়াণায় হরপ্পা সভ্যতা যুগের প্রত্ন-নিদর্শন আবিষ্কার

হরিয়াণায় হরপ্পা সভ্যতা যুগের প্রত্ন-নিদর্শন আবিষ্কার

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

প্রত্নতত্ত্বর সঙ্গে আধুনিক বিজ্ঞানের সম্পর্ক অতি নিবিড়। মাটির তলায় কোথায় অতি প্রাচীন কালের জিনিসপত্র, কঙ্কাল, শস্যদানা প্রভৃতি আছে তা চিহ্নিত করবার জন্য রিমোট সেন্সিং প্রকৌশল ব্যবহার করা হয়, কখনো কখনো ড্রোনও। তবে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির আসল প্রয়োগ ঘটে আবিষ্কৃত পদার্থগুলির বিশ্লেষণে। হাড়, উদ্ভিদ, পরাগরেণু প্রভৃতি নমুনাগুলির বয়স নিরূপণ করা হয়, সেগুলির উপাদান বিশ্লেষণ করা হয়। এর ফলে বহুলাংশে নির্ভুল সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হয়। হরিয়াণার হিসার জেলার রাখীগঞ্জ গ্রামে ৪০০ হেক্টর জুড়ে ছড়িয়ে আছে মোট সাতটি ঢিপি। সেগুলোর নীচে জমা হয়ে আছে হরপ্পা সভ্যতা যুগের অমূল্য কিছু নিদর্শন। সম্প্রতি সেখানে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্য থেকে ৫০০০ বছর আগের হরপ্পা সভ্যতা যুগের কয়েকটি কঙ্কাল, গহনা ও মাটির বাসনপত্র পাওয়া গেছে। ভারত সরকারের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ ১৯৯৭-৯৮ থেকে এখানে খননকার্য শুরু করেন। ২০১২ সাল থেকে দক্ষিণ কোরিয়া আর ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিকরা যৌথভাবে এই খননকার্য চালাচ্ছেন। ২০১৫ সালে পুণার ডেকান কলেজের অধ্যাপক বসন্ত শিদের নেতৃত্বে প্রত্নতাত্ত্বিকদের একটি দল সাত নম্বর ঢিপি থেকে চারটি হরপ্পা যুগের কঙ্কাল আবিষ্কার করেন। ২০১৬ সালে আরও ১৫টি কঙ্কাল আবিষ্কৃত হয়। পরে আরও অনেক। এখনো পর্যন্ত মোট ৬০টি। এদের ডি এন এন পরীক্ষা করে জানা গেছে হরপ্পা সভ্যতা যুগের এই বাসিন্দাদের উৎপত্তি একটি সুনির্দিষ্ট জায়গা থেকে। রাখীগঞ্জের এইসব ঢিপি থেকে সিন্ধু সভ্যতার নগর-পরিকল্পনা, আচার অনুষ্ঠান, সমাধি-প্রক্রিয়া প্রভৃতি সম্বন্ধে অনেক মূল্যবান জ্ঞান আহরণ করা সম্ভব হয়েছে। একটা সমাধিক্ষেত্র আর শস্যগোলা ছাড়াও এখানে পাওয়া গেছে মাটির তৈরি বাসনপত্র, নরম সাবান জাতীয় পদার্থের পুতি, খোলক, মূল্যবান অ্যাগেট ও কার্নেলিয়ান পাথরের তৈরি জিনিসপত্র, শিকারের হরেক হাতিয়ার। এ বাদে পাত, খোলকের তৈরি বালা আর পাথরের পুতি পাওয়া গেছে।