হলুদে অতিরিক্ত মাত্রায় সীসা!

হলুদে অতিরিক্ত মাত্রায় সীসা!

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৫ নভেম্বর, ২০২৪
Default Alt Text

ভারত, নেপাল, পাকিস্তানে রান্নায় ব্যবহৃত হলুদে বেঁধে দেওয়া মাত্রার ওপরে সীসা পাওয়া গেছে। ভারত পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপালের ২৩টা মুখ্য শহর থেকে এই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। ভারতের পাটনা, পাকিস্তানের করাচি, পেশওয়ারের নেওয়া হলুদের নমুনায় প্রতি গ্রামে ১০০০ মাইক্রোগ্রামের ওপর সীসা পাওয়া গেছে। ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এফএসএসএআই)-র বেঁধে দেওয়া মাত্রার ওপরে সীসা গৌহাটি ও চেন্নাইয়ের হলুদেও পাওয়া গেছে। এফএসএসএআই-র বেঁধে দেওয়া মাত্রা হল প্রতি গ্রামে ১০ মাইক্রোগ্রাম সীসা। এই গবেষণা সায়েন্স অফ দ্য টোটাল এনভায়রনমেন্টে প্রকাশিত হয়েছে।
সীসাযুক্ত হলুদ থেকে শরীরে বিষক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যাতে শিশুদের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ভারী ধাতু সীসা অনেকটা আমাদের হাড়ে থাকা ক্যালসিয়ামের মতো। সীসা আমাদের বিপাকীয় কাজে বাধা দেয়, বুদ্ধিমত্তায় ব্যাঘাত ঘটায়, হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ায়, কিডনি নষ্ট করতে পারে, মৃত্যুও ঘটাতে পারে। বাচ্চাদের প্রতি লিটার রক্তে ১০ মাইক্রোগ্রাম সীসা তাদের বুদ্ধিমত্তার সূচক ১ পয়েন্ট কমায়। বিশ্বজুড়ে ৮১ কোটি ৫০ লক্ষ বাচ্চার রক্তের প্রতি লিটারে ৫০ মাইক্রোগ্রাম সীসা পাওয়া যায়। ৪১কোটি ৩০ লাখ বাচ্চার রক্তে ১০০ মাইক্রোগ্রামের বেশি সীসা পাওয়া যায়। বাচ্চাদের রক্তের প্রতি ডেসিলিটারে ৩.৫ মাইক্রোগ্রাম সীসা থাকলেও দেখা গেছে, তাদের বুদ্ধিমত্তা কমেছে, আচরণগত সমস্যা, শিখনে সমস্যা দেখা যাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে খাবারে কোনো মাত্রাতেই সীসা থাকা ভালো নয়। পালিশ করা হলুদের শিকড়ে সীসার মাত্রা সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে, এরপরেই আছে খোলা হলুদ গুঁড়ো, প্যাকেটজাত নামী ব্র্যান্ডের হলুদ গুঁড়ো আর শেষে পালিশ না করা হলুদের মূল। সীসার উৎস হল লেড ক্রোমেট, যে হলুদ রঞ্জক, রঙে, রবারে, প্লাস্টিক, সেরামিকের আস্তরণে ব্যবহার করা হয়। রঙ ভালো দেখানোর জন্য এই বিষাক্ত রঞ্জক মেশানো হয়।