
হাওয়াই দ্বীপে অদ্ভুত এক শুঁয়োপোকার সন্ধান মিলেছে। নাম দেওয়া হয়েছে হাড়-কুড়ানি শুঁয়োপোকা। সায়েন্স পত্রিকায় তার বিবরণ প্রকাশিত হয়েছে। গাছের গুঁড়ি কিংবা শিলাপাথরের ফাঁকফোকরে লুকোনো মাকড়সার জালের মধ্যে এদের বাস। আর কোথাও এরা বাস করে না। অন্য বেশির ভাগ শুঁয়োপোকা উদ্ভিদ খেয়ে বাঁচে। হাড়-কুড়ানিরা কিন্তু মাংসাশী। এরা মাকড়সার জালে আটক মরা কিংবা মৃতপ্রায় পতঙ্গ খুঁটে খুঁটে খায়। কিন্তু মূলত এরা স্বজাতি-মাংসভোজী, পরস্পরকে মেরে খায়। এ বিষয়ের প্রধান গবেষক ড্যানিয়েল রুবিনফ একথা জানিয়েছেন। মাকড়সারা আবার এদের খায়। খাদক মাকড়সাদের হাত থেকে বাঁচবার জন্য এরা একটা ভয়ংকর ছদ্মবেশী কৌশল প্রয়োগ করে। প্রথমে এরা একটা রেশমের গুটি বানিয়ে তার মধ্যে আশ্রয় নেয়। তারপর অতি যত্নে নিজেদের সাজায় পতঙ্গদেহের টুকরো-টাকরা দিয়ে, যথা গুবরে জাতীয় ফসলখেকো পোকার মাথা, অন্য ধরনের গুবরে পোকার পেট, মাছির পাখা, কখনো কখনো এমনকি মাকড়সার ছাড়া খোলস। যেটা দেখলে প্রথমে হবে হবে একটা মাকড়সার খোলস, ঠিক তার পাশেই থাকবে পতঙ্গদের টুকরো-টাকরা দেহাবশেষ সেলাই করে বানানো একটা তাগাড়। রুবিনফ বলেছেন, প্রকৃতিতে এর চেয়ে বিদঘুটে জিনিস তিনি আর দেখেননি। এই শুঁয়োপোকারা আবার অস্বাভাবিক খুঁতখুঁতে। কাঁকর, বালি জাতীয় খড়খড়ে জিনিসে এদের রুচি নেই। এরা কেবল মরা পতঙ্গদেহ খুঁটেই খায়। জিন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এইসব হাড়-কুড়ানি শুঁয়োপোকারা তাদের নিকটতম আত্মীয়দের থেকে ৫০ লক্ষাধিক বছর আগে উদ্ভূত হয়েছিল। তার মানে এদের বাসস্থান হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জর থেকে এদের বয়স বেশি। এদের সংখ্যা এতই কম যে বিশ বছর ধরে মাঠে ময়দানে তল্লাসি করে বিজ্ঞানীরা মাত্র ৬২টি হাড়-কুড়ানি শুঁয়োপোকার সন্ধান পেয়েছেন। আশঙ্কা, জঙ্গল কাটা আর শত্রু-পতঙ্গদের প্রকোপে এদের আয়ু আর খুব বেশিদিন নয়।