হিমশীতল পরিবেশে সামুদ্রিক কীটকে রক্ষা করে কিছু ব্যাকটেরিয়া

হিমশীতল পরিবেশে সামুদ্রিক কীটকে রক্ষা করে কিছু ব্যাকটেরিয়া

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৬ জুন, ২০২৪

পৃথিবীর তিন ভাগ জল আর এক ভাগ স্থল- এই তিন-একের বাঁধনে বাঁধলেও সাগর-মহাসাগরের এই বিস্তৃত জলরাশির বেশিরভাগ অংশই অজানা। বছরের পর বছর ধরে সমুদ্রের তলায় দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিজ্ঞানীরা সন্ধান চালিয়েছে। এই সন্ধান চালাতে গিয়ে কখনও কখনও নানান অজানা সামুদ্রিক প্রাণীর খোঁজ পাওয়া গেছে, উঠে এসেছে আজানা নানা তথ্য। নতুন এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন অ্যান্টার্কটিকের সামুদ্রিক কীট তাদের ব্যাকটেরিয়া বন্ধুদের অল্পবিস্তর সাহায্য নিয়ে জীবনধারণ করে। সমুদ্রের তলদেশের অধিবাসী এইসব কেঁচোর মতো কিছু প্রাণী কীভাবে অ্যান্টার্কটিকের জলে নিম্ন তাপমাত্রায় বেঁচে থাকে তা বিজ্ঞানীদের কাছে একটি রহস্যের বিষয়। আইসফিশ জাতীয় কিছু প্রাণী তাদের নিজস্ব অ্যান্টিফ্রিজ প্রোটিন তৈরি করে, কিন্তু অ্যান্টার্কটিকের বেশিরভাগ জীবের এই ক্ষমতা নেই। সায়েন্স অ্যাডভান্সে প্রকাশিত এক গবেষণায় জানা গেছে আন্টার্কটিকে বসবাসকারী পলিকীটের শরীরে এক বিশেষধরনে ব্যাকটেরিয়া বসবাস করে যা একধরনের প্রোটিন তৈরি করে। ঠান্ডায় জমে প্রাণ হারানোর থেকে এই প্রোটিন সেই সব পলিকীটদের সাহায্য করে। গবেষকদের মতে সমুদ্রে হোস্ট-মাইক্রোব মিথস্ক্রিয়া সম্পর্কে জ্ঞান আমাদের এখনও অবিশ্বাস্যভাবে সীমিত। গবেষকরা তিনটি উপকূলীয় অঞ্চল থেকে তিনটি সাধারণ সামুদ্রিক কীট প্রজাতি সংগ্রহ করেছিলেন – দুটি মৃত জীবের অবশিষ্টাংশে বেঁচে থাকে এবং একটি শিকারী। রিপোর্ট অনুযায়ী এই অঞ্চলে জলের তাপমাত্রা প্রায় -১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। গবেষকেরা ওই সংগৃহীত কীট থেকে ডিএনএ বিশ্লেষণ করে অণুজীবগুলো নিরীক্ষণ করে। কীটের শরীরে যে ব্যাকটেরিয়া সবচেয়ে সাধারণ ছিল সেগুলো হল- মিওথার্মাস সিলভানাস এবং দুই ধরনের অ্যানোক্সিব্যাসিলাস। গবেষণায় দেখা গেছে পলিকীটের থেকে নিষ্কাশিত ব্যাকটেরিয়া প্রোটিন ঠান্ডা সহনশীলতার ক্ষমতা প্রদান করে। যেমন, দুটি এনজাইমেটিক প্রোটিন, গ্লিসারল এবং প্রোলিন উৎপন্ন করে, যা অভ্যন্তরীণ তরলের হিমাঙ্ক হ্রাস করতে পারে ফলে প্রাণীরা প্রচণ্ড ঠান্ডা থেকে নিজেদের রক্ষা করে বলে মনে করা হয়। কেঁচো জাতীয় এই সব প্রাণীদের সাথে তাদের অংশীদারিত্ব থেকে ব্যাকটেরিয়াগুলোও উপকৃত হয়, কারণ তারা প্রতিরক্ষামূলক প্রোটিন তৈরির বিনিময়ে একটি নিরাপদ আশ্রয় পায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five + fourteen =