২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ৮৪ কোটি মানুষ পিঠের নিম্নাংশে ব্যথার সমস্যায় ভুগবেন

২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ৮৪ কোটি মানুষ পিঠের নিম্নাংশে ব্যথার সমস্যায় ভুগবেন

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১ আগষ্ট, ২০২৩

পিঠের নিম্নাংশে ব্যথা থেকে ধীরে ধীরে সারা শরীর অক্ষম হয়ে পড়া – আজ সারা বিশ্বের প্রায় ৬০ কোটি মানুষ এই ব্যথা নিয়ে ভুগছে। দ্য ল্যানসেট রিউমাটোলজি জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে। প্রায় ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সারা বিশ্বে প্রায় ৫০০টি গবেষণা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে দেশ, বছর, বয়স, লিঙ্গ এবং তীব্রতা অনুসারে পদ্ধতিগত বিশ্লেষণ করে ‘গ্লোবাল বারডেন অফ লো ব্যাক পেন’ বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে। “বারডেন” বলতে পিঠের নিম্নাংশে ব্যথা কতটা সাধারণ এবং এটি কতটা ক্ষতির দিকে নিয়ে যায় তার সমন্বয়কে বোঝায়।গবেষণায় ৫ বছর বয়সের উর্ধের বাচ্চাদেরকেও ধরা হয়েছে। বিগত তিন দশক ধরে শারীরিক অক্ষমতার কারণ হিসেবে পিঠের নিম্নাংশে বা কোমরে ব্যথা প্রথম স্থানে রয়েছে। এই গবেষণা গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজ স্টাডি নামে একটি বৃহত্তর প্রকল্পের অংশ, যার লক্ষ্য বিশ্বব্যাপী সমস্ত স্বাস্থ্য ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা।
সমীক্ষায় তিনটি প্রধান কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে- স্থূলতা, ধূমপান এবং কর্মক্ষেত্রের পরিবেশগত কারণ। এই কারণগুলো সংশোধন করলে ব্যথার প্রকোপ ৩৯ শতাংশ কমে যেতে পারে- এমনটাই জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। পূর্বে ভাবা হত ধূমপানের কারণে মেরুদণ্ডের ডিস্ক এবং জয়েন্টে রক্ত সঞ্চালন ক্ষতিগ্রস্থ হয় সেইসঙ্গে হাড় দুর্বল হয়ে যায়। কিন্তু গবেষকরা আরও বলেছেন যে ধূমপান প্রায়শই অন্যান্য জীবনযাপন পদ্ধতির সাথে সংযুক্ত যেমন শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা, স্থূলতা, কম ঘুম- আর এর সবগুলোর কারণেই পিঠের নিম্নাংশে ব্যথা হতে পারে। একইরকমভাবে, স্থূলতা অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন পদ্ধতির সাথে যুক্ত, যার সবগুলোই পিঠে ব্যথার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। স্থূলতা মেরুদন্ডের উপর বর্ধিত চাপ সৃষ্টি করে যার কারণে আঘাত লাগা বা প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।
গবেষণায় দেখা গেছে মহিলাদের ক্ষেত্রে এই ব্যথার প্রকোপ বেশি। তথ্য বলছে প্রায় ৪০ কোটি মহিলারা পিঠের নিম্নাংশে ব্যথায় ভুগছেন যেখানে পুরুষদের ক্ষেত্রে সংখ্যাটি ২২ কোটি।এই রোগ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য আরও ভালো এবং আরও কার্যকর উপায় প্রয়োজন। বর্তমানে দেখা গেছে যে, হয় চিকিত্সা কাজ করে না অথবা খুব সামান্য ক্ষেত্রে ব্যথার উপশম হয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যথা উপশমকারী কিছু ওষুধ বা কিছু অস্ত্রোপচার করা হয়ে থাকে। তাই রোগ নিরাময়ের জন্য যেমন আমাদের নিজেদের দৈনন্দিন জীবনযাপনের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে হবে তেমনি রোগ নিরাময়ের জন্য আরও বেশি গবেষণার প্রয়োজন।