২১০০ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠর উচ্চতা বৃদ্ধির পূর্বাভাস

২১০০ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠর উচ্চতা বৃদ্ধির পূর্বাভাস

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

নানিয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি এবং ডেলফট ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, সিঙ্গাপুর-এর একটি সাম্প্রতিক যৌথ গবেষণায়, আন্তঃবিভাগীয় গবেষক দলের কাজ আমাদের গ্রহের উপকূলীয় এলাকার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কিছু উদ্বেগজনক খবর দিয়েছে। যদি বিশ্বের কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন বর্তমান হারে বাড়তে থাকে, তবে ২১০০ সালের মধ্যে আমরা হয়তো সমুদ্রপৃষ্ঠের জলতলের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখতে পাব, যা ০.৫ থেকে ১.৯ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। এই পূর্বাভাসটি জাতিসংঘের সর্বশেষ অনুমানের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি, যেখানে ০.৬ থেকে ১.০ মিটার বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল।
এই নতুন বিশ্লেষণটি একটি উচ্চ-নির্গমন পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে, যেখানে কার্বন নির্গমন অব্যাহতভাবে বাড়ছে। গবেষণা দলটি জোর দিয়েছে যে এই পূর্বাভাসের সর্বোচ্চ সীমা ১.৯ মিটার যা, পূর্বে জাতিসংঘ কর্তৃক পূর্বাভাস দেওয়া সর্বোচ্চ মাত্রা থেকে ৯০ সেন্টিমিটার বেশি।
সমুদ্রপৃষ্ঠের এমন নাটকীয় বৃদ্ধির পরিণতি সুদূরপ্রসারী হতে পারে। বিশ্বের উপকূলবর্তী শহরগুলি অভূতপূর্ব বন্যার সম্মুখীন হতে পারে, যার ফলে সেখানকার মানুষেরা স্থানচ্যুত হবে, সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে। এছাড়াও, উপকূলীয় অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্রগুলি মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন হবে, যার ফলে জীববৈচিত্র্য হ্রাস হতে পারে।
যেহেতু এই পূর্বাভাস আতঙ্কজনক তাই গবেষকরা কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন কমানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার উপর জোর দিয়েছেন। এই ভীতিপ্রদ পূর্বাভাস আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে জলবায়ু পরিবর্তনকে সরাসরি মোকাবেলা করার প্রয়োজন কতটা জরুরি। এই গবেষণা বিভিন্ন দেশের সরকার, সংগঠন এবং ব্যক্তিদের কাছ থেকে একটি যৌথ প্রচেষ্টা আহ্বান করে যাতে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানো এবং আমাদের গ্রহের ভবিষ্যত রক্ষার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যায়।
এদিকে, সম্ভাব্য পরিবর্তনের জন্য তথ্যাভিজ্ঞ থাকা এবং প্রস্তুত থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ু পরিবর্তনের বাস্তবতা বুঝতে পারা একটি স্থিতিশীল ভবিষ্যতের জন্য প্রভাবশালী সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রথম ধাপ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 + ten =