নিয়ন্ত্রিত বিদ্যুৎ চালিত ফোটন উৎসের সাথে সাথেই কোয়ান্টাম প্রযুক্তির বাস্তবতার দিকে আরেক ধাপ অগ্রসর হল মানবসভ্যতা। অসাধ্যসাধনের কৃতিত্ব আয়ার্ল্যান্ডের টিন্ডাল ন্যাশানাল ইন্সটিটিউটের।
কোয়ান্টাম গণনপ্রযুক্তিকেই বিশ্বায়নের যুগে নবীনতম বিপ্লব বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। গুগল, ইন্টেল বা আইবিএম-এর মতো বড়ো সংস্থাগুলি এখন প্রচুর টাকা খরচ করছেন কোয়ান্টাম পরিকাঠামোর খাতে। যন্ত্রসভ্যতার ভবিষ্যৎ কোয়ান্টাম – আরও সূক্ষ্ম কার্যকরী কম্পিউটার উদ্ভাবনার মূলেই আছে কোম্পানিগুলির এই দরাজ পৃষ্ঠপোষকতা।
আশাতীত ভাবে অনেক আগেই হয়তো কোয়ান্টাম কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ আমরা পাবো। টিন্ডালের গবেষকরা এই উদ্দেশ্যে একধরণের কোয়ান্টাম লিপ তৈরি করেছেন।
প্রচলিত ডিজিটাল কম্পিউটারগুলি সুইচ চালু বা বন্ধের ব্যবস্থায় কাজ করে। কিন্তু, পদার্থের কোয়ান্টাম অবস্থান খোঁজাই কোয়ান্টাম কম্পিউটারের বিশেষত্ব। বিজড়িত ফোটন কণিকা অথবা পরমাণুর বহুমাত্রিক অস্তিত্বের ভিতরেই লুক্কায়িত থাকে তথ্য। তাত্ত্বিকভাবে, এই পদ্ধতিতেই আরও দ্রুত ক্রিয়াশীল গণকযন্ত্রের আগমন সম্ভব । তবে প্রযুক্তি এখনও তত্ত্বের পরিপূরক হয়ে উঠতে পারেনি।
বিজড়িত ফোটন কণার উৎস হিসেবে, টিন্ডাল ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা কোয়ান্টাম ডট এলইডি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।
যদিও, এলইডি ব্যবহার করে বিজড়িত ফোটন উৎপাদন যে আগে হয়নি, তেমন না। তবে, নতুন এই গবেষণায় যে ধরণের পদ্ধতি ও উপাদান ব্যবহৃত হয়েছে, তা ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়েই নির্ণীত। গবেষক ডঃ এমানুয়েল পেলুচ্চি জানিয়েছেন, প্রচলিত অর্ধপরিবাহী এবং সহজলভ্য পদার্থের সাহায্যেই এই বিদ্যুৎচালিত কোয়ান্টাম ডট প্রযুক্তি কাজ করে, এবং এই পদ্ধতিতে ফোটনের অবস্থান ও গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভবপর।
পিরামিডের মতো গঠনটিতে ন্যানোস্কেল বৈশিষ্ট্যের প্রয়োগে বিজড়িত ফোটন কণিকা উৎপাদিত হয় । উল্লম্ব কোয়ান্টাম তারের মধ্যে বিদ্যুতচালনা করে কোয়ান্টাম ডটগুলিকে কার্যক্ষম করতে হবে, এমনই ব্যাখ্যা দিচ্ছেন ডঃ পেলুচ্চি।
টিন্ডাল ন্যাশানাল ইন্সটিটিউটের মুখ্য কর্মাধ্যক্ষ ডঃ কিয়েরেন ড্রেন তাঁর সংস্থার এই সাফল্যকে যুগান্তকারী বলেই মনে করছেন। কোয়ান্টাম গণনের ক্ষেত্রে এই উদ্ভাবন সভ্যতাকে পথ দেখাবে। আরও দ্রুত হবে বৈদ্যুতিন যোগাযোগ ব্যবস্থা। এই বিষয়ে ভবিষ্যতে ব্যাপকতর আর্থিক উদ্যোগ, প্রতিভা ও গবেষণা চলতেই থাকবে, এই বলে আশ্বাস দিয়েছেন ডঃ কিয়েরেন।