যোগাযোগ স্থাপনের জন্য শিম্পাঞ্জিরা পাতার ব্যবহার করে

যোগাযোগ স্থাপনের জন্য শিম্পাঞ্জিরা পাতার ব্যবহার করে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ২৭ জানুয়ারী, ২০২৩

অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে একে অপরের সাথে যোগাযোগ শিম্পাঞ্জিদের সামাজিক জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। একে অপরের থেকে খাবার চাইতে, কথা বলতে বা মারামারির পরে আবার বন্ধুত্ব করতে শিম্পাঞ্জিরা বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি ব্যবহার করে।এবং এই অঙ্গভঙ্গিগুলো তারা বিভিন্নভাবে করে যেমন কিছু ক্ষেত্রে তারা শুধুমাত্র হাত ব্যবহার করে আবার কখনো অন্যকে স্পর্শ করে, আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের আশপাশের পরিবেশ থেকে পাওয়া লাঠি, গাছ বা গাছের পাতা ব্যবহার করে।
সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ৫ই-জানুয়ারী সায়েন্টিফিক রিপোর্টে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলেন যে আফ্রিকার উগান্ডায় অবস্থিত বুডংগোর জঙ্গলে, পাশাপাশি বসবাসকারী দুটো গোষ্ঠীর শিম্পাঞ্জি তাদের দলের অন্যান্য সদস্যদের সাথে যোগাযোগের জন্য গাছের পাতা ব্যবহার করে, তবে পাতা ব্যবহারের পদ্ধতির মধ্যে কিছু পার্থক্য থাকে। তারা বিভিন্ন সাংকেতিক ভাষায় এবং বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে একে অপরের সাথে কথা বলে। গবেষকরা দেখেছেন যে পূর্ব থেকে পশ্চিম আফ্রিকা পর্যন্ত প্রায় সমস্ত সম্প্রদায়ের শিম্পাঞ্জিদের মধ্যে এই যোগাযোগের পদ্ধতি দেখা গেছে। গাছের পাতা ছেঁড়া বা ছেঁড়ার শব্দ অথবা কান্ড থেকে টেনে টেনে পাতা ছেঁড়ার ভঙ্গি প্রভৃতি বিভিন্নভাবে পাতা ব্যবহার করে শিম্পাঞ্জিরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে। অনেকসময় এইসব অঙ্গভঙ্গিগুলো একইরকম দেখতে লাগে। গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে শিম্পাঞ্জিদের একটা গোষ্ঠী তাদের নিজের পছন্দ মতো পদ্ধতিতে গাছের পাতা ব্যবহারের মাধ্যমে একে অপরের সাথে কথা বলে আবার তাদেরই প্রতিবেশী শিম্পাঞ্জির গোষ্ঠী সেই পাতা অন্যভাবে ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে ভাব বিনিময় করে। প্রতিটি গোষ্ঠীর শিম্পাঞ্জির নিজের নিজের পাতা ব্যবহারের পদ্ধতি ও অঙ্গভঙ্গি রয়েছে। এই গবেষণায় প্রথমবার গবেষকরা দেখেন যে প্রতিটি গোষ্ঠীর পাতা ব্যবহার করে অঙ্গভঙ্গির ক্ষেত্রে নিজস্ব শৈলী বা উপভাষা আছে এবং এই পার্থক্যগুলো জঙ্গলের পরিবেশ বা জিনগত পার্থক্য দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না।