দক্ষিণ গোলার্ধের সব মহাসাগর তেতে উঠছে কেন?

দক্ষিণ গোলার্ধের সব মহাসাগর তেতে উঠছে কেন?

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

আমরা পায়রা ওড়াই, বাজি পোড়াই… শুধু কি তাই! পৃথিবীর পেট ছিঁড়ে জীবাশ্ম জ্বালানী তুলে নিরন্তর জ্বালাতে থাকি। গরম নিঃশ্বাসের মতো বেরোতে থাকে গ্রিনহাউস গ্যাস। নীলকণ্ঠের মতো কার্বন দূষণের নব্বই ভাগ শুষে নেয় সাগর মহাসাগরের জল। প্রত্যেক সেকেন্ডে জলের তলায় একটা করে পরমাণু বোমা ফাটালে এতটাই তেতে থাকত সমুদ্র।
কিন্তু তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে অনেকটাই এগিয়ে আছে দক্ষিণ গোলার্ধের মহাসাগরগুলো। কোনও কোনও জায়গায় হটস্পট তৈরি হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। কিন্তু কারণ নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে ধোঁয়াশা ছিল।
এই ধন্দের নিষ্পত্তি হয়েছে বলেই মনে করছেন সিডনীর নিউ সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের মোনাইন্যা রাউঘান ও তাঁর সহকারী গবেষক জুন্ডে লি-র। প্রোফেসর রাউঘান ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ে সমুদ্রতত্ত্ব পড়ান। ওনাদের মতে মূল খলনায়ক হচ্ছে শক্তিশালী পুবালি বাতাস। পৃথিবীর পশ্চিম ভাগ ধরে বড়ো বড়ো সমুদ্রের উপর দিয়ে ঝঞ্ঝার তালে বয়ে আসে ঐ হাওয়া। পথে দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিলের মতো ঘন জনবসতির দেশগুলোকে পার করে আসে। সমুদ্রের স্রোতকে ব্যাপকভাবে নিয়ন্ত্রণে সক্ষম বিশেষ এই বায়ুপ্রবাহ।
দক্ষিণ গোলার্ধের সমুদ্রে মূল তিনটি প্রভাবশালী সমুদ্রস্রোত চোখে পড়ে। এক, ভারত মহাসাগরে আগুলহাস স্রোত; দুই, প্রশান্ত মহাসাগরে ইস্ট অস্ট্রেলিয়ান স্রোত। সাথে আছে অ্যাটলান্টিকে ব্রাজিল স্রোত। এবার ঝামেলাটা শুরু হয়েছে পুবালি বাতাসের ফোঁপরদালালির জন্যে। ঐ বায়ুপ্রবাহ দক্ষিণ গোলার্ধের তিন সমুদ্র স্রোতকে আরও দক্ষিণে টেনে নিয়ে যায়। ফলে পৃথিবীর এই অর্ধে সমুদ্রের উষ্ণতা দ্রুতহারে বাড়তেই থাকে।
প্রোফেসর রাউঘান আর সহকর্মী জুন্ডে লি আশংকা করছেন যত দিন যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল বা অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে উপকূলের বাসিন্দারা গরমের ঠ্যালায় যুঝতে থাকবেন। বড়ো আকারের ক্ষতি হবে স্বাভাবিক বাস্তুতন্ত্র আর জীবিকাতেও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 2 =