আমাদের নিকটতম বানরদের থেকে, অথবা বাকি প্রাণীদের তুলনায় কোন কারণে আলাদা মানুষের মাথা? উত্তর খুঁজতে নতুন এক গবেষণা চালিয়েছিলেন আমেরিকার ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল। চারটে বানর প্রজাতির প্রাণীর মাথার প্রি-ফ্রন্টাল কর্টেক্স অংশের কোষ নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা হয়েছে। গবেষণাপত্র প্রকাশিত হল সায়েন্স পত্রিকায়।
বিজ্ঞানীরা মস্তিষ্কের সেই অঞ্চলে বিশেষভাবে নজর দিয়েছেন, যার পোশাকি নাম ডর্সোল্যাটারাল প্রি-ফ্রন্টাল কর্টেক্স। সাধারণত প্রাইমেটদের মগজের মধ্যেই এটা থাকে। উচ্চ চিন্তাক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে মস্তিষ্কের এই অংশ। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের মগজের এই বিশেষ খণ্ড থেকে হাজার হাজার কোষ সংগ্রহ করে তাদের মধ্যে জিন বৈশিষ্ট্য খুঁজে দেখা হয়েছিল এই গবেষণায়। এছাড়াও শিম্পাঞ্জী, ম্যাকাও আর মার্মোসেট বাঁদরের শরীর থেকেও এই ধরণের কোষ নেওয়া হয়েছিলো।
মুখ্য গবেষক নেনাড সেস্টান বলছেন, মানুষের জৈবিক পরিচিতির মূল হল এই ডর্সোল্যাটারাল প্রি-ফ্রন্টাল কর্টেক্স। কিন্তু এখনও জানা সম্ভব হয়নি কিভাবে মস্তিষ্কের এই অংশটা মানুষকে বানর প্রজাতির অন্য প্রাণীদের থেকে পৃথক করে। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিউরোসায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক নেনাড সেস্টান।
চারটে প্রাণীর মগজের নমুনা ছানবিন করে ১০৯ ধরণের কোষ খুঁজে পাওয়া গেছে। সমস্ত প্রাইমেটের মস্তিষ্কেই এই কোষগুলো বিদ্যমান। কিন্তু ৫টা একেবারে আনোখা কোষেরও সন্ধান মিলেছে। যেগুলো প্রধানত মাইক্রোগ্লিয়া। এরা মস্তিষ্কের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে।
মানুষ একেবারেই অন্যরকম পরিবেশে বড় হয়, তাদের জীবনযাত্রাও অন্য প্রাণীদের তুলনায় একদম আলাদা। মস্তিষ্কের গ্লিয়া নামের কোষগুলো কিন্তু এই ভিন্ন পরিবেশেও খুব সংবেদনশীল। প্রফেসর সেস্টান বলছেন মগজের ঐ বিশেষ অংশের বিশেষ গ্লিয়া কোষের সৌজন্যেই হয়তো মানুষ এতটা আলাদা।