বিশ্বের বৃহত্তম গাছ প্যান্ডো, ভেঙে তিন টুকরো হতে চলেছে

বিশ্বের বৃহত্তম গাছ প্যান্ডো, ভেঙে তিন টুকরো হতে চলেছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

অ্যাস্পেন লম্বা কাণ্ড আর ছোট গোল পাতাবিশিষ্ট পাইন জাতের গাছ। অ্যামেরিকার ইউটা প্রদেশে বিশালাকার প্রাচীন একটা অ্যাস্পেন গাছ এতদিন দিব্বি দাঁড়িয়ে ছিল বিস্তীর্ণ এলাকাব জুড়ে। তর্কের অবকাশ রেখে বলাই যায়, ঐ বৃক্ষ পৃথিবীর বৃহত্তম প্রাণ। অরেগন প্রদেশের দৈত্যাকার ছত্রাক অথবা পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার সামুদ্রিক ঘাসও এই তালিকায় জায়গা পাবে।
ইউটায় প্রায় একশো একর জমি দখল করে ডালপালা ছড়িয়ে ছিল কোয়েকিং অ্যাস্পেন গোত্রের ঐ গাছ। বৈজ্ঞানিক নাম পি ট্রেমুলয়েডস। দেখলে মনে হবে অনেকগুলো গাছ। কিন্তু তারা জিনগতভাবে সমান আর একটা সাধারণ মূলতন্ত্র দ্বারা সংযুক্ত। একসাথে প্যান্ডো নামে ডাকা হয়।
বছর পাঁচেক আগে ইউটা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ গবেষকদের একটা দল প্যান্ডোর হালহকিকত বিচার করে দেখেছিল। তখন মূল সমস্যা ছিল ঐ অঞ্চলের হরিণ আর গবাদি পশু। গাছের কচি অংশগুলো তারা অবাধে খেয়ে নিত। সংরক্ষণের জন্যে অনেক জায়গায় বেড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করেন বিজ্ঞানীরা।
কিছুদিন আগেই তদারকি করতে ফের সেখানে যান পল রজার্স। ইনি ইউটা স্টেট ইউনিভার্সিটির বাস্তুতন্ত্রের অধ্যাপক। দেখা যায় কিছু কিছু বেড়া নষ্ট হয়ে গিয়েছে। উনি প্যান্ডোর দুরবস্থা নিয়ে কঞ্জারভেশান সায়েন্স অ্যান্ড প্র্যাকটিস নামের পত্রিকায় একটা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন। তাতেই গবেষক দলের পক্ষ থেকে একশো একর বিস্তৃত প্যান্ডোকে তিনটে আলাদা বাস্তুতান্ত্রিক পথে ভাগ করে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অধ্যাপক রজার্স এই উদ্যোগকে পদ্ধতিমাফিক পুনরুদ্ধার বলতে চান। ওনার মতে, এই বিশেষ সংরক্ষণের উপায়ের দৃষ্টান্ত একাধিক আছে। এই প্রণালীতে সরাসরি একটা বাস্তুতন্ত্রে খাদ্য-খাদক সম্পর্ক নতুন করে চালু করা হয় না। বরং নির্দিষ্ট কিছু প্রাণীকে এলাকা থেকে হটানোর জন্য নির্বাচিত শিকারি জন্তুকে নিয়োগ করা হয়। ফলে, স্থানীয় গবাদি পশুরা ঐ বাস্তুতন্ত্র থেকে দূরে থাকে।
প্যান্ডোকে টুকরো করলেও পল রজার্স আশাবাদী যে অ্যাস্পেন গোষ্ঠীর গাছ বাঁচানো সম্ভব এই উপায়েই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 + 1 =