নাসার পারসেভারেন্স রোভার উপগ্রহ এখনও পর্যন্ত মঙ্গলে অভিযান চালিয়ে যে কটা পাথর সংগ্রহ করে বিজ্ঞানীদের হাতে তুলে দিয়েছে তার গবেষণা করেই বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন মঙ্গলে একসময় ছিল বিশাল আগ্নেয়গিরি! যাকে বিজ্ঞানীরা বলছেন ‘সুপার ভলক্যানো’! এই বিশাল আগ্নেয়গিরি থেকে অন্তত এক হাজারের বেশি অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল। একসময় মানে প্রায় ৫০ কোটি বছর আগে! বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণ জানাচ্ছে, মঙ্গলের উত্তরে, যে অঞ্চলটিকে অ্যারাবিয়া টেরা বলা হচ্ছে সেখানেই হয়েছিল বিশাল অগ্ন্যুৎপাতগুলো। এবং যে পরিমাণ লাভা সেই অগ্ন্যুৎপাতগুলো থেকে নির্গত হয়েছিল তাতে বিজ্ঞানীদের মতে ৪০ কোটি আন্তর্জাতিক সাইজের সুইমিং পুল ভরে যেত! লাভা থেকে মূলত বেরিয়েছিল গলা পাথর এবং গ্যাস।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই বিস্ফোরণগুলি এত শক্তিশালী ছিল যে নির্গমনের সময় মঙ্গলে সুর্যের আলোর পৌঁছনো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মঙ্গলপৃষ্ঠে বিজ্ঞানীরা যে এত গর্ত খুঁজে পেয়েছেন তার অন্যতম কারণ এই অতি বিস্ফোরণ। এমনকী, বিজ্ঞানীরা নাসার বিশেষভাবে তৈরি অরবিটার ব্যবহার করে দেখেছেন মঙ্গলের উত্তরের এই অঞ্চল জুড়ে ছাইও পড়ে থাকতে! থ্রি-ডাইমেনশনাল এমআরও ক্যামেরার ব্যবহারে বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণ, পরবর্তীকালে লাভায় নির্গত খনিজদ্রব্যগুলি কাদা মাটিতে পরিণত হয়ে গিয়েছিল। গবেষণা আরও জানিয়েছে, মঙ্গলের এই ‘অতি বিস্ফোরণগুলি’র সঙ্গে মিল রয়েছে পৃথিবীর বুকে হওয়া বিশাল অগ্ন্যুৎপাতগুলির সঙ্গে! ৭৬ হাজার বছর আগে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রায় হওয়া মৌনা লোয়া আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতকে এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর বুকে হওয়া সবচেয়ে বড় অগ্ন্যুৎপাত বলা হয়। কিন্তু মঙ্গলে এর চেয়ে একশো গুণ বড় আকারে অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।