দু’টো জিরাফ নিজেদের মধ্যে মারামারি করছে, এরকম দৃশ্য বিরল। কিন্তু যখন করে তখনও সেই দৃশ্যটা বিরল হয়ে যায়! কারণ দু’টো জিরাফের মারামারি হয় ভয়ঙ্কর। জেসিকা গ্র্যানওয়েলার ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক। তাঁর গবেষণার বিষয়বস্তু দীর্ঘতম প্রাণীরা। ২০১৬ থেকে ২০১৭-র মধ্যে জেসিকা দক্ষিণ আফ্রিকার জঙ্গলে ছিলেন গবেষণার কাজে। দেখেছেন বয়স্ক জিরাফ নিজেদের মধ্যে মারামারি করছে। উপলক্ষ্য হয় নিজের অঞ্চল দখল করার জন্য, অথবা সঙ্গমের অধিকার অর্জন করার জন্য। সে মারামারি ভয়ঙ্কর। বিশাল লম্বা ঘাড়ের যাবতীয় শক্তি দিয়ে শিং-এর মতো জোড়া অসিকোনটা প্রতিদ্বন্দ্বী জিরাফের শরীরে ঢুকিয়ে দেয় মারামারির সময়। কখনও কখনও এই মারামারিতে গুরতরভাবে আহত হয় জিরাফ। এমনকী, দুই জিরাফের এই সংঘাতে একজনকে মরে যেতেও দেখেছেন জেসিকা!
কিন্তু তারপরও এই সংঘাত, জেসিকার মতে স্বাভাবিক। কিন্তু একটা ব্যাতিক্রমী কারণ জেসিকা সাত মাসের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। সেটা হল জিরাফরা সম্মান অর্জনের লড়াইয়েও প্রচণ্ড সঙ্ঘাতে লিপ্ত হয়! ঠিক মানুষের মতোই। জেসিকা লক্ষ্য করেছেন, বয়স্ক কোনও জিরাফ, অল্পবয়সী জিরাফের সঙ্গে ঝগড়া শুরু করার পর, অল্পবয়সী জিরাফটি তীব্র অসন্তুষ্ট হলেও মারামারিতে জড়ায় না! ঠিক বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করেও যেমন ছেলে বা মেয়ে বিরক্তি নিয়েও নিঃশব্দে চলে যায়। কিন্তু দু’টো বয়স্ক জিরাফের তীব্র ঝগড়া মারামারিতে পরিণত হওয়ার মধ্যে সম্মান অর্জনের লড়াইও দেখেছেন জেসিকা। গবেষণাটি না হলে কে জানত মানুষের সঙ্গে জিরাফের কত মিল!