রক্ত চোষা সামুদ্রিক ল্যাম্প্রে আবার আমেরিকার গ্রেট লেকে ফিরে আসছে

রক্ত চোষা সামুদ্রিক ল্যাম্প্রে আবার আমেরিকার গ্রেট লেকে ফিরে আসছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৭ জুলাই, ২০২৩

“ভ্যাম্পায়ার ফিশ”- একটি ভয়ঙ্কর ধরনের পরজীবী মাছ যারা তারই হোস্টদের রক্ত শোষণ করে বেড়ে ওঠে, আবার উত্তর আমেরিকার গ্রেট লেকে ফিরে আসছে। বৃত্তাকার সারি দাঁত, করাতের মতো কাটা কাটা জিভ এবং পাঁকাল মাছের মতো আকৃতির এই মাছকে সামুদ্রিক ল্যাম্প্রে বলে। কোভিড মহামারীর সময় এই প্রজাতির জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিঘ্নিত হয়েছিল।
ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (NOAA)মতে, সামুদ্রিক ল্যাম্প্রে উত্তর এবং পশ্চিম আটলান্টিক মহাসাগরের বাস করে। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে ওয়েল্যান্ড খাল, যেটা লেক অন্টারিও এবং লেক ইরিকে সংযুক্ত করে তার মাধ্যমে গ্রেট লেকে এদের আনাগোনা শুরু হয়।
এক দশকের মধ্যে, এই ল্যাম্প্রে পাঁচটা গ্রেট লেকে প্রবেশ করে, এবং দ্রুত হ্রদের বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ মাছ, যেমন ট্রাউট, হোয়াইটফিশ, পার্চ এবং স্টার্জন শিকার করতে থাকে। ল্যাম্প্রের অনিয়ন্ত্রিত বিস্তারের ফলে এক শতাব্দীর মধ্যে ট্রাউট ফিশারি ভেঙে পড়ে। ওয়্যার্ডের রিপোর্ট অনুযায়ী ১৯৬০ সাল নাগাদ, সামুদ্রিক ল্যাম্প্রে গ্রেট লেকের, লেক ট্রাউটের বার্ষিক বাণিজ্যিক ক্যাচ প্রায় ১৫ মিলিয়ন থেকে কমিয়ে অর্ধ মিলিয়ন পাউন্ডে নামিয়ে এনেছিল। কিন্তু ২০২০ এবং ২০২১ সালের মধ্যে, কোভিড-19 মহামারী এবং পরবর্তী ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার জন্য এজেন্সিগুলো বিভিন্ন লেকে গিয়ে তাদের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের কাজ করতে পারেনি। বর্তমানে, ফিসারী কমিশনের মতে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল রিপোর্ট করেছে যে গ্রেট লেক জুড়ে পরজীবী মাছের জনসংখ্যা বেড়েছে ।
জনসংখ্যা ঠিক কতটা বেড়েছে তা স্পষ্ট নয়, তবে আনডার্ক ম্যাগাজিনের ২০২২ সালের রিপোর্ট অনুসারে, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী দলটি ২০২০ সালে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ২৫ শতাংশের চিকিত্সা করতে সক্ষম হয়েছিল ও পরের বছর, দলটি তাদের লক্ষ্যমাত্রার ৭৫ শতাংশে পৌঁছেছে। এই চিকিত্সা ব্যয়বহুল এবং শ্রমসাধ্য, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে ল্যামপ্রিসাইড নামক কীটনাশক সাবধানে সময়মতো প্রয়োগের প্রয়োজন হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × one =