মানব জীবনের শুরুতেই সিজোফ্রেনিয়ার বীজ লুকিয়ে থাকে

মানব জীবনের শুরুতেই সিজোফ্রেনিয়ার বীজ লুকিয়ে থাকে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১০ জুলাই, ২০২৩

এক গুরুতর স্নায়বিক ব্যাধি, সিজোফ্রেনিয়া, জিনগত এবং পরিবেশগত কারণের জটিল সংমিশ্রণে হতে পারে। ছোটোবেলায় কোনো মানসিক আঘাত বা আতঙ্ক অথবা ভাইরাল সংক্রমণের মতো কারণ এই রোগের উৎস হতে পারে যা পরবর্তী জীবনে বিভ্রান্তিকর বা উদ্ভট চিন্তাভাবনার লক্ষণ হিসেবে দেখা দেয়। বিশ্বে প্রতি ৩০০ জনের মধ্যে ১ জনের এই রোগ হতে পারে আর সাধারণত প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার প্রথম দিকেই এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। তবুও এমন তথ্য রয়েছে যা প্রমাণ করে যে সিজোফ্রেনিয়া গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে বা গর্ভকালীন জটিলতার ফলে উদ্ভূত হতে পারে।
২০১৭ সালে, বিজ্ঞানীরা ক্ষুদ্র মস্তিষ্কের মতো কোশ গবেষণাগারে তৈরি করে তা অধ্যয়ন করে দেখেন যে, অসংগঠিত মস্তিষ্কের কোশ দ্রুত বিভাজিত এবং খুব তাড়াতাড়ি আলাদা হয়ে যাওয়ার ফলে সম্ভবত সিজোফ্রেনিয়ার হতে পারে। অন্যদিকে ২০২১ সালে, গবেষকরা প্ল্যাসেন্টায় নির্দিষ্ট জিন চিহ্নিত করেন যা জটিল গর্ভধারণের সময় সক্রিয় থাকে এবং পরবর্তী ক্ষেত্রে এই রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের চিকিৎসক-বিজ্ঞানী এডুয়ার্ডো মাউরি এবং তার সহকর্মীরা NRXN1 এবং ABCB11 নামের দুটি জিন শনাক্ত করেছেন, এবং তারা মনে করছেন যখন এই জিনের প্রতিলিপি জরায়ুতে হারিয়ে যায় তখন সমস্যা সৃষ্টি হয়, আর এই কারণেই এটি সিজোফ্রেনিয়ার সাথে যুক্ত বলে মনে করা হচ্ছে। বোস্টন চিলড্রেন’স হাসপাতালের জেনেটিসিস্ট ক্রিস ওয়ালশ বলেছেন যে এমন কিছু পরিব্যক্তি দেখা গেছে যেগুলো বাবামায়ের কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া যায় না। NRXN1 এবং ABCB11 জিনে গবেষকরা ‘কপি নম্বর ভেরিএশান’ নামে এক ধরনের জেনেটিক ত্রুটি দেখতে পেয়েছেন যেখানে ডিএনএ-র অতিরিক্ত প্রতিলিপি তৈরি হয় বা তা হারিয়ে যায়। গবেষকদের মতে এই দুটি জিনের পরিবর্তন সম্ভবত সিজোফ্রেনিয়ার জন্য দায়ী। গবেষণাটি সেল জিনোমিক্সে প্রকাশিত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 − thirteen =