কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা মানব কোশের গভীরে একটি প্রোটিনের মধ্যে অ্যান্টি-এজিং কার্যকলাপ দেখতে পেয়েছেন। কুইন্সল্যান্ড ব্রেইন ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক স্টিভেন জুরিন এবং ডক্টর মাইকেল দাই -এর এই গবেষণা নেচার সেল বায়োলজি- তে প্রকাশিত হয়েছে। তারা আবিষ্কার করেছেন যে ATSF-1 নামে একটা প্রোটিন নতুন মাইটোকন্ড্রিয়া তৈরি এবং ক্ষতিগ্রস্ত মাইটোকন্ড্রিয়ার মেরামত নিয়ন্ত্রণ করে। মাইটোকন্ড্রিয়া, তাদের নিজস্ব ডিএনএ – র সাহায্যে কোশের মধ্যে শক্তি উত্পাদন করে যা জৈবিক ক্রিয়াকলাপকে শক্তি যোগায়। তবে এই প্রক্রিয়ায় বিষাক্ত উপজাতগুলি কোশের বয়স বৃদ্ধির সাথে বাড়তে থাকে। স্ট্রেস পরিস্থিতিতে, যখন মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন ATSF-1 প্রোটিন কোশীয় স্বাস্থ্য এবং কোশের দীর্ঘায়ুর জন্য মেরামতকে অগ্রাধিকার দেয়।
গবেষকরা C. elegans, বা গোলকৃমির ATFS-1 অধ্যয়ন করে দেখেছেন যে এর কার্যকারিতা বাড়লে কোশীয় স্বাস্থ্য উন্নীত হয়। অর্থাৎ কৃমিগুলো দীর্ঘ সময়ের জন্য চটপটে হয়ে ওঠে। কৃমিগুলোর বয়সের দিক দিয়ে বাঁচা বিশেষ না বাড়লেও, বয়স হলেও তারা সুস্থ ছিল। মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিসফাংশন অনেক মানুষের রোগের মূলে রয়েছে, যার মধ্যে ডিমেনশিয়া এবং পারকিনসন্সের মতো সাধারণ বয়সজনিত রোগও রয়েছে।
গবেষকরা জানিয়েছেন তাদের এই অনুসন্ধান স্বাস্থ্যকর বার্ধক্য এবং উত্তরাধিকারসূত্রে মাইটোকন্ড্রিয়াল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। কোশগুলো কীভাবে নিজেদের মেরামত করতে শুরু করে তা বোঝা গেলে মাইটোকন্ড্রিয়াল ক্ষতি রোধে সম্ভাব্য পদক্ষেপ নেওয়া এই গবেষণার একটা গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। গবেষকদের লক্ষ্য হল টিস্যু বা কলা এবং অঙ্গের কার্যকলাপ দীর্ঘায়িত করা যা সাধারণত বার্ধক্যের সময় হ্রাস পায় এবং এতে মাইটোকন্ড্রিয়ার কী অবদান তা বোঝা। তারা কোশের বার্ধ্যকের সময়েও তাকে সুস্থ রাখতে এমন কিছু ডিজাইন করতে চান যা মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএকে দীর্ঘ সময়ের জন্য স্বাস্থ্যকর রাখবে এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।