বৃহস্পতিবার থেকে জাপান ফুকুশিমা-দাইচি পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে বর্জ্য জল সমুদ্রে ফেলবে

বৃহস্পতিবার থেকে জাপান ফুকুশিমা-দাইচি পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে বর্জ্য জল সমুদ্রে ফেলবে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৩ আগষ্ট, ২০২৩

জাপান ঘোষণা করেছে বৃহস্পতিবার থেকে তারা ফুকুশিমা-দাইচি পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে বর্জ্য জল সাগরে ছাড়া শুরু করবে। কিন্তু , সকলের এ বিষয়ে উদ্বেগ রয়েছে যে নিষ্কাশিত জল কতটা নিরাপদ, আর তা তেজস্ক্রিয়তা মুক্ত কিনা। প্রায় ১০০,০০০ লিটার (২৬,৫০০ গ্যালন) দূষিত জল, যা বিকল উদ্ভিদের চুল্লিগুলো ঠান্ডা করার জন্য জল, পাশাপাশি ভূগর্ভস্থ জল এবং বৃষ্টিপাত প্রতিদিন উত্তর-পূর্ব জাপানের একটা অংশে সংগ্রহ করা হয়। প্রায় ১.৩৪ মিলিয়ন টন জল জমা হয়েছে, যা প্রায় ৫৪০ টি অলিম্পিক পুলের সমতুল্য। সেই জল এখন সমুদ্রতীরবর্তী স্থানে প্রায় এক হাজার স্টিলের পাত্রে সংরক্ষণ করা হয়েছে কিন্তু আর জল জমিয়ে রাখার জায়গা নেই বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। বছরের পর বছর আলোচনার পর জাপান ২০২১ সালে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, এক কিলোমিটার (০.৬ মাইল) দীর্ঘ একটি পাইপের মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ৫০০,০০০ লিটার সমুদ্রে তারা ছেড়ে দেবে।
প্ল্যান্ট অপারেটর TEPCO বলেছেন যে ALPS নামক একটি বিশেষ ফিল্টারিং সিস্টেমে ট্রাইটিয়াম ছাড়া সিজিয়াম এবং স্ট্রনশিয়াম সহ সমস্ত তেজস্ক্রিয় উপাদানগুলো মুক্ত করা গেছে। TEPCO বলেছে যে এটি তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা কমিয়ে প্রতি লিটারে ১,৫০০ বেকারেল (Bq/L) করার জন্য জল লঘু করেছে, এই ১,৫০০ বেকারেল জাতীয় নিরাপত্তা মান ৬০,০০০ Bq/L এর থেকে অনেক কম।
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা বলছে, যে জলে যে পরিমাণ তেজস্ক্রিয় বস্তু থাকবে তা আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী বিপদমুক্ত। কিন্তু গ্রিনপিস মঙ্গলবার বলেছে যে জল ফিল্টার করার জন্য ব্যবহৃত প্রযুক্তি ত্রুটিপূর্ণ এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা অত্যন্ত তেজস্ক্রিয় জ্বালানী যা ধ্বংসাবশেষ গলাতে ব্যবহার করা হচ্ছে, তা প্রতিদিন ভূগর্ভস্থ জল দূষিত করছে তাকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করেছে । এর ফলে সারা পৃথিবী বিপদের মুখে পড়বে। প্রশান্ত মহাসাগরকে জাপান নর্দমার মতো ব্যবহার করছে, এই মর্মে চিন জাপান থেকে খাবার আমদানি নিষিদ্ধ করেছে, এবং অন্য দেশের আমদানিকৃত খাদ্যদ্রব্য তেজস্ক্রিয়তামুক্ত কিনা তা পরীক্ষা করে তবেই তা ছাড়পত্র দেবে। সাউথ কোরিয়া ভীত এবং সমুদ্রজাত লবণ ব্যবহার করতে ভয় পাচ্ছে। জাপান তার নিজের দেশেও এই জল ছাড়ার বিপক্ষে শক্তিশালী মতামত পাচ্ছে।
আরও বিপজ্জনক কাজ হল ২০১১ সালে গলিত তিনটি চুল্লি থেকে তেজস্ক্রিয় ধ্বংসাবশেষ এবং অত্যন্ত বিপজ্জনক পারমাণবিক জ্বালানী অপসারণ করা। TEPCO জ্বালানি অপসারণের জন্য রোবট ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছে তবে আশঙ্কা রয়েছে যে বিকিরণের মাত্রা এত বেশি যে তা স্বয়ংক্রিয় মেশিনকে অক্ষম করে দিতে পারে। এই বিশাল প্রক্রিয়াটি শেষ হতে ৩০ থেকে ৪০ বছর সময় লাগবে আর প্রায় আট ট্রিলিয়ন ইয়েন ($55 বিলিয়ন) খরচ হবে বলে জানা যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 3 =