আদিম যুগের মহিলারা সুদক্ষ শিকারী ছিল

আদিম যুগের মহিলারা সুদক্ষ শিকারী ছিল

বাছাই করা খবর- ২০২৩
Posted on ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৩

কৃষিকাজ জানার আগে আদিম মানুষের খাবার ছিল ফলমূল বা তাদের শিকার করা পশুপাখি। এক জায়গায় খাবার ফুরিয়ে গেলে তারা আর এক জায়গায় গিয়ে বসবাস শুরু করত যেখানে খাবারের প্রাচুর্য রয়েছে। এই যাযাবর সম্প্রদায়ের মানুষদের আমরা ইংরেজিতে বলি হান্টার-গ্যাদারার। এই গোষ্ঠীর পুরুষরাই শুধুমাত্র শিকার করতে যেত আর মহিলারা খাবার হিসেবে ফলমূল সংগ্রহ করে আনত এমন ধারণাই প্রচলিত ছিল। কিন্তু বর্তমানে সারা বিশ্বজুড়ে বেশ কিছু সম্প্রদায়ের মানুষদের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে এই গোষ্ঠীর অন্তত ৭৯ শতাংশ মহিলারা শিকারে অংশগ্রহণ করত। এই ধারণার অনুসন্ধানের জন্য, অ্যান্ডারসন এবং সহকর্মীরা উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, এশিয়া এবং মহাসাগরীয় অঞ্চলের সমাজ ব্যবস্থা সহ সারা বিশ্বের ৬৩ টি ফরেজিং সোসাইটির উপর বিগত ১০০ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির অ্যাবিগেল অ্যান্ডারসনের নেতৃত্বে গবেষণাটি সম্প্রতি PLOS ONE জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তারা দেখেছেন যে বিশ্লেষিত সমাজের ৭৯ শতাংশ মহিলারা শিকার করতে যেত। আর সেই সব মহিলারা সন্তানদের দেখভাল করার পাশাপাশি শিকার করত। গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে মহিলারা সক্রিয়ভাবে শিকার করতে শেখাত এবং প্রায়শই পুরুষদের তুলনায় তারা বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ও শিকার করতে ভিন্ন ভিন্ন প্রকৌশলও ব্যবহার করত। আদিম যুগের মহিলারা সুদক্ষ শিকারী ছিল এবং গোষ্ঠীতে তাদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তাই এটা বেশ স্পষ্ট যে আগেকার দিনে গোষ্ঠীতে মহিলা ও পুরুষদের মধ্যে ভেদাভদ করা হত না। লেখকরা আরও উল্লেখ করেছেন যে বহু ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে এই স্টেরিওটাইপ ধারণা- ‘যে মহিলারা শিকার করতে যেত না’ পূর্ববর্তী প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণাকে প্রভাবিত করেছে। উদাহরণস্বরূপ, মহিলাদের সাথে সমাধিস্থ বস্তুকে শিকারের সরঞ্জাম হিসাবে ব্যাখ্যা করতে বেশ কিছু গবেষক অনিহা প্রকাশ করেছেন। অ্যান্ডারসনের গবেষক দল তাই এই ধরনের প্রমাণের পুনর্মূল্যায়ন এবং ভবিষ্যতের গবেষণায় পুরুষদের শিকারী এবং নারীদের শুধুমাত্র সংগ্রাহক হিসাবে গণ্য করার ক্ষেত্রে সতর্ক করেছেন।