বায়োইঞ্জিনিয়ারড ব্যাকটেরিয়া বর্জ্য জল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে

বায়োইঞ্জিনিয়ারড ব্যাকটেরিয়া বর্জ্য জল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

বিজ্ঞানীরা বর্জ্য জল থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ই. কোলি ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করেছেন৷ জীববিজ্ঞানে সবচেয়ে বেশি অধ্যয়ন করা ব্যাকটেরিয়ার সাহায্যে বায়োইলেক্ট্রনিক্সে এই যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেওয়া গেছে। এই অভিনব পদ্ধতি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং শক্তি উৎপাদন উভয় ক্ষেত্রেই বিপ্লব ঘটাতে পারে। আর্ডেমিস বোঘোসিয়ান, ইপিএফএল, সুইজারল্যান্ডের লুসানে একটি পাবলিক রিসার্চ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জানিয়েছেন, কিছু জীবাণু আছে যা প্রাকৃতিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, তবে সেই জীবাণু শুধুমাত্র নির্দিষ্ট রাসায়নিকের উপস্থিতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। কিন্তু ই. কোলি বিস্তৃত উৎসের উপর বৃদ্ধি পেতে পারে, যার ফলে বর্জ্য জল সহ বিস্তৃত পরিবেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে।

ই. কোলি ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে এক্সট্রা সেলুলার ইলেক্ট্রন ট্রান্সফার (ইইটি) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিদ্যুৎ তৈরি করা হয়েছে। গবেষকরা উন্নত ইইটি প্রদর্শনের জন্য বায়োইঞ্জিনিয়ারড ই. কোলি ব্যাকটেরিয়া তৈরি করেছেন, যা তাদের অত্যন্ত দক্ষ “বৈদ্যুতিক জীবাণু” করে তুলেছে। আগের নানা পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নির্দিষ্ট রাসায়নিক প্রয়োজন ছিল, বায়োইঞ্জিনিয়ারিং করা ই. কোলি বিভিন্ন ধরনের জৈব বস্তু বিপাক করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। গবেষক দল এই প্রযুক্তি লুসানের একটি স্থানীয় মদ কারখানা থেকে সংগৃহীত বর্জ্য জলের উপর সরাসরি পরীক্ষা করেন। তারা জৈব বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের জন্য সিস্টেমে শক্তি প্রয়োগ করার পরিবর্তে, জৈব বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হন।

বহিরাগত জীবাণু যেখানে বেঁচে থাকতে পারেনি, যেখানে এই জৈব প্রকৌশলী বৈদ্যুতিক ব্যাকটেরিয়া এই বর্জ্য খেয়ে দ্রুত বিকাশ লাভ করতে সক্ষম হয়েছিল। অধ্যয়নের প্রভাবগুলি বর্জ্য পরিশোধন বাইরেও প্রসারিত। বিস্তৃত উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে সক্ষম হওয়ায় বায়ো ইঞ্জিনিয়ারড ই. কোলিকে মাইক্রোবিয়াল ফুয়েল সেল, ইলেক্ট্রোসিন্থেসিস এবং বায়োসেন্সিং-এ ব্যবহার করা যেতে পারে।

ব্যাকটেরিয়া জেনেটিকভাবে নমনীয় হলে একে নির্দিষ্ট পরিবেশ এবং ফিডস্টকের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য তৈরি করা যেতে পারে, যাতে এটা টেকসইভাবে প্রযুক্তি উন্নয়নের জন্য একটা বহুমুখী হাতিয়ার হয়ে ওঠে। ইপিএফএল-এর প্রধান বিজ্ঞানী মোহাম্মদ মুহিব জানিয়েছেন তাদের এই কাজ বেশ সময়োপযোগী, কারণ প্রকৌশলী বায়োইলেকট্রিক জীবাণুর ব্যবহার আরও বেশি করে বাস্তব-বিশ্বের প্রয়োগের সীমানা বাড়াচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 4 =