লবণের গুণাগুণ

লবণের গুণাগুণ

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

অ্যাডভান্সড সাসটেইনেবল সিস্টেমস জার্নালে প্রকাশিত এক নতুন গবেষণাপত্রে রাবনওয়াজ এবং তার সহকর্মীরা দেখিয়েছেন যে সোডিয়াম ক্লোরাইড বা সাধারণ লবণ – প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারযোগ্য করতে সাহায্য করতে পারে আর এই পদ্ধতি খুব একটা ব্যয়বহুলও নয়। যদিও প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারযোগ্য হিসাবে বাজারে আনা হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৯০% প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে ল্যান্ডফিল করা হচ্ছে, ইনসিনেরেটর মেশিনে জ্বালানো হচ্ছে বা পরিবেশে পড়ে থেকে তা দূষণ করছে। প্লাস্টিক ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া হয় কারণ প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলার জন্য যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হয় তা অনেক বেশি। গবেষক দলের অনুমান, লবণ এই পরিচিত অর্থনীতিকে উল্টে দিতে পারে। পাইরোলাইসিস নামে পরিচিত এই প্রক্রিয়া যা তাপ এবং রসায়নের মাধ্যমে কাজ করে এ ক্ষেত্রে খরচ কমাতে পারে। পাইরোলাইসিস এমন এক প্রক্রিয়া যা প্লাস্টিককে ভেঙে সরল, কার্বন-ভিত্তিক যৌগের মিশ্রণে বা গ্যাস, তরল তেল এবং কঠিন মোমে পরিণত করে। রাবনওয়াজের মতে উৎপাদিত দ্রব্যের মধ্যে মোম যদিও অবাঞ্ছিত তবুও বর্তমান পাইরোলাইসিস পদ্ধতি অনুসারে মোট উৎপাদিত বস্তুর ওজনের অর্ধেকেরও বেশি পরিমাণ হল- মোম। তবে বর্জ্য প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনায় অনুঘটকের ব্যবহার প্রায়শই বিষাক্ত বা ব্যয়বহুল হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, অনুঘটক হিসেবে প্লাটিনামের বৈশিষ্ট্য বেশ আকর্ষণীয় আর তাই এটি গাড়ি থেকে ক্ষতিকারক নির্গমন কমাতে অনুঘটক রূপান্তরকারী মেশিনে ব্যবহৃত হয়। তবে প্লাটিনাম বেশ দামি, যে কারণে চোর এই মেশিনগুলো চুরি করে নেয়। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন পদ্ধতিটি বেশ ব্যয়বহুল। আগের গবেষণায়, রবনওয়াজ এবং তার দল দেখিয়েছিল যে কপার অক্সাইড এবং লবণ দুটি মিলে পলিস্টাইরিন নামে পরিচিত একটি প্লাস্টিককে ভাঙতে অনুঘটক হিসাবে কাজ করে। এই গবেষণায় তারা দেখিয়েছেন যে পাইরোলাইসিস পদ্ধতিতে লবণ ব্যবহার করে পলিওলিফিন থেকে মোম উৎপন্ন হয় না বরং হাইড্রোকার্বন অণুযুক্ত তরল তেল তৈরি হয় যা ডিজেল জ্বালানীতে পাওয়া যায়। আবার উৎপাদিত এই তরল তেল থেকে লবণ পুনরুদ্ধার করা যায়। তাছাড়াও লবণ ব্যবহার করে এই পাইরোলাইসিস পদ্ধতি ব্যয়সাপেক্ষও নয়। কিন্তু গবেষকের দল সাধারণ লবণ ব্যবহার করে পাইরোলাইসিস পদ্ধতিতে উৎপন্ন দ্রব্যের মধ্যে গ্যাসটিকে সম্পূর্ণরূপে চিহ্নিত করতে পারেননি এবং রাবনওয়াজ মনে করেন যে পদ্ধতিটি আরও উন্নত করলে তরল দ্রব্যটি জ্বালানী হিসাবে পোড়ানোর চেয়ে আরও ভালোভাবে ব্যবহার করা যাবে।