কোজাগরী পূর্ণিমায় চন্দ্রগ্রহণ

কোজাগরী পূর্ণিমায় চন্দ্রগ্রহণ

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৯ অক্টোবর, ২০২৩

২৮-শে অক্টোবর পৃথিবীর ছায়ার মধ্যে চাঁদ প্রবেশ করবে আর সেই সঙ্গে ম্লান হয়ে আসবে চাঁদের আলো। এই চন্দ্রগ্রহণ পূর্ব গোলার্ধের বেশিরভাগ অংশ জুড়েই দৃশ্যমান হবে। ইউরোপ, আফ্রিকা, এশিয়া, অ্যান্টার্কটিকা এবং ওশেনিয়া মহাদেশ থেকে চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে। উত্তর এবং দক্ষিণ আমেরিকার কিছু অংশ থেকেও চন্দ্রগ্রহণ দৃশ্যমান হবে। উত্তর গোলার্ধে এই চন্দ্রগ্রহণ ‘হান্টারস মুন’ নামে পরিচিত। ভারতবর্ষের সময় অনুসারে এই গ্রহণ দেখা যাবে ২৮ শে অক্টোবর অর্থাৎ কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে। গ্রহণ শুরু হবে রাত ১.০৫ মিনিটে এবং শেষ হবে রাত ২.২৪ মিনিটে। পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদের কিছু অংশ পৃথিবীর অন্ধকার অভ্যন্তরীণ ছায়া বা আম্ব্রার মধ্যে থাকবে আর তখন চাঁদের রঙ দেখাবে লালচে, সৃষ্টি হবে ‘ব্লাড মুন’-এর। যদিও চাঁদের মাত্র ৬% অস্পষ্ট থাকবে তবুও এই দৃশ্যটি বেশ দর্শনীয় হবে। গ্রহণের দৃশ্যটি সবচেয়ে ভালো দেখা যাবে ইউরোপ, আফ্রিকা এবং এশিয়া থেকে। এই সব অঞ্চলের পর্যবেক্ষকরা চাঁদকে পৃথিবীর পেনাম্ব্রা-র ভিতরে এবং বাইরে যেতে দেখতে পাবেন। পৃথিবীর ছায়ায় ঢোকার আগে চাঁদ প্রথম তার উপচ্ছায়া অঞ্চলে ঢুকবে আর তখন চাঁদকে আংশিক দেখা যাবে, তারপর পৃথিবীর ছায়ায় যখন চাঁদ প্রবেশ করবে তখন পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ হবে আর চাঁদকে দেখা যাবে না, এরপর পৃথিবীর ছায়া থেকে চাঁদ যখন দ্বিতীয় উপচ্ছায়া অঞ্চলে প্রবেশ করবে তখন চাঁদকে আংশিকভাবে দেখা যাবে। তাই নিউইয়র্ক, আলাস্কা এবং নর্থ ক্যারোলিনা সহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অঞ্চলে গ্রহণের শেষ পর্যায়টুকুই দেখা যাবে। প্রতিটি চন্দ্রগ্রহণ পৃথিবীর অর্ধেক অঞ্চল থেকে দেখা যায়। যখন পৃথিবী চাঁদ এবং সূর্যের মধ্যে সুনির্দিষ্টভাবে অবস্থান করে, তখন পৃথিবীর ছায়া তার উপগ্রহ চাঁদের পৃষ্ঠে পড়ে এবং চাঁদের আলোর স্বাভাবিক উৎসকে অস্পষ্ট করে তোলে। আংশিক চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদের একটি ছোটো অংশ পৃথিবীর ছায়া দ্বারা আবৃত থাকে। সূর্য, পৃথিবী এবং চাঁদের একই সারিতে আসা নির্ধারণ করে যে পৃথিবীর মানুষের কাছে চাঁদের কতটা অংশ দৃশ্যমান হবে। তখন চাঁদের আকার দেখে মনে হয় যে কেউ তার থেকে খানিকটা অংশ কামড়ে নিয়েছে। এই সময় অর্থাৎ ২-রা নভেম্বর বৃহস্পতি গ্রহকেও পূর্ণরূপে দেখা যাবে যখন পৃথিবী সরাসরি বৃহস্পতি এবং সূর্যের মধ্যে অবস্থান করবে। পৃথিবী এবং বৃহস্পতি উভয়ই প্রায় একই সমতলে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে, কিন্তু পৃথিবীর কক্ষপথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে ৩৬৫ দিন বা ১ বছর সময় লাগে, কিন্তু বৃহস্পতি ১১.৯ গুণ বেশি সময় নেয়। বৃহস্পতি এই বছর পৃথিবী থেকে মাত্র ৫৯৫ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করছে (গড় ৭৭৮ মিলিয়ন কিমি) তাই আমাদের সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহটি একবার দেখার জন্য এটি একটি দুর্দান্ত সময়।