সম্প্রতি জাপানে সামুদ্রিক আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণের পর নতুন দ্বীপ তৈরি হয়েছে

সম্প্রতি জাপানে সামুদ্রিক আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণের পর নতুন দ্বীপ তৈরি হয়েছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ১৩ নভেম্বর, ২০২৩

সম্প্রতি জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপপুঞ্জের উপকূলে রিং অফ ফায়ারের আগ্নেয়গিরির ছাই থেকে আরেকটি ফিনিক্স-সদৃশ দ্বীপ উঠেছে, ওগাসাওয়ারা দ্বীপপুঞ্জ আবার বনিন দ্বীপপুঞ্জ নামেও পরিচিত। এই নতুন ভূমি ২১ শে অক্টোবর প্রশান্ত মহাসাগরের নিচের আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত থেকে জন্ম নিয়েছে, যা তার প্রতিবেশী ভূমিখণ্ডের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞ সেটসুয়া নাকাদা বলেছেন যে জলের নীচে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত শুরু থেকে সমুদ্র তরঙ্গের উপরে উচুতে শক্ত ম্যাগমার ‘উল্লম্ব জেট’ ছড়িয়ে শুরু হয়েছিল, যার থেকে এই নতুন দ্বীপটি তৈরি হয়েছে, পরে অগ্ন্যুৎপাতটি থেকে ক্রমাগত বিস্ফোরণ হতে থাকে। আগ্নেয়গিরির সমস্ত ধ্বংসাবশেষ লাভা হিসাবে পুনরায় সমুদ্রে ফিরে আসার সাথে সাথে, পিউমিস নামক একটি ছিদ্রযুক্ত, কম ঘনত্বের উপাদানের সাথে মিশ্রিত হয়ে পাথরের ঢিবির মতো তৈরি হয়েছিল, ঠিক যেন এটি পেরিস্কোপের মতো সমুদ্রের গভীরতা থেকে উঁকি দিচ্ছিল। নাকাদা জানিয়েছেন, ৩রা নভেম্বর ওই অঞ্চলের উপর দিয়ে ওড়ার সময় তিনি দেখেছেন, সমুদ্রের নীচের আগ্নেয়গিরিটির অগ্ন্যুৎপাতের ধরনে পরিবর্তন এসেছিল, আর সেটি বেশিরভাগ ছাই নির্গত করছিল।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় সক্রিয় রিং অফ ফায়ার অঞ্চলের সমুদ্রের আগ্নেয়গিরি ঘিরে থাকা ভূমিতে অবস্থিত নানা আগ্নেয়গিরি সম্বন্ধে অনেক কিছু জানা যায়, তবে সমুদ্রের তলদেশে থাকা ভেন্ট এবং ফিসার সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়। বিজ্ঞানীরা অনুমান করেছেন যে সারা বিশ্বে এক মিলিয়নেরও বেশি আগ্নেয়গিরি সমুদ্রের নীচে রয়েছে, তবে এর মধ্যে অনেকগুলি সম্ভবত বিলুপ্ত, এমনকি যেগুলি সক্রিয় তারা সক্রিয় হলেও এত গভীরে থাকে যে জলের উপর থেকে পর্যবেক্ষণ করা যায় না।
এইসব অগ্ন্যুৎপাত থেকে দ্বীপ গঠন হতে দেখা আরও বিরল, যেমন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে হাওয়াইয়ান দ্বীপপুঞ্জ লক্ষ লক্ষ বছর আগে একবার গঠিত হয়েছিল। ২০১৫ সালে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে একবার এরকম দ্বীপ গঠিত হয়েছিল, যা সমস্ত ধরনের বিজ্ঞানীদের গবেষণা ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। তবে ২০২২ সালে আবার অগ্ন্যুতপাতে এই দ্বীপ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। তাই এই নতুন দ্বীপের অস্তিত্ব কতদিন থাকবে তা বলা যায় না। তবে দ্বীপ গঠন সম্বন্ধে এটি গবেষকদের আলোকিত করতে পারে।