অটোইমিউন রোগের চিকিৎসায় আদার ব্যবহার

অটোইমিউন রোগের চিকিৎসায় আদার ব্যবহার

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ২৭ নভেম্বর, ২০২৩

সাম্প্রতিক গবেষণায় বলা হয়েছে যে সম্পূরক হিসেবে আদার ব্যবহার অটোইমিউন রোগের প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী। জেসিআই ইনসাইট জার্নালে বিস্তারিত এই গবেষণাটিতে বলা হয়েছে এক ধরনের শ্বেত রক্ত কণিকা- নিউট্রোফিলের ওপর আদা প্রভাব ফেলতে সক্ষম। গবেষণায় বিশেষ করে প্রদাহ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আদার প্রভাব বোঝার জন্য নিউট্রোফিল এক্সট্রা সেলুলার ট্র্যাপ (NET) গঠনের প্রক্রিয়াটি পরীক্ষা করা হয়। নিউট্রোফিল এক্সট্রা সেলুলার ট্র্যাপ (NETs) গঠনের প্রক্রিয়াটি NETosis নামে পরিচিত, যা পরিবর্তিত ক্রোমাটিন দ্বারা গঠিত এবং গ্রানুল এবং সাইটোপ্লাজম থেকে প্রোটিন দ্বারা সজ্জিত। বিভিন্ন রোগজীবাণু, অ্যান্টিবডি এবং ইমিউন কমপ্লেক্স, সাইটোকাইনস, মাইক্রোক্রিস্টাল এবং অন্যান্য শারীরবৃত্তীয় উদ্দীপনার কারণে NETosis হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে সুস্থ ব্যক্তিদের আদা খাওয়ার ফলে তাদের নিউট্রোফিলগুলো NETosis-এর বিরুদ্ধে আরও প্রতিরোধী হয়ে ওঠে। এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ NETs এক ধরনের আণুবীক্ষণিক মাকড়সার জালের মতো কাঠামো যা প্রদাহ এবং জমাট বাঁধতে সাহায্য করে, এবং লুপাস, অ্যান্টিফসফোলিপিড সিন্ড্রোম এবং রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস সহ অনেক অটোইমিউন রোগে প্রভাব ফেলে। ইউনিভার্সিটি অফ কলোরাডো স্কুল অফ মেডিসিনের গবেষক ক্রিস্টেন ডেমোরেলের মতে এমন অনেক রোগ আছে যেখানে নিউট্রোফিলগুলো অস্বাভাবিকভাবে সক্রিয়। দেখা গেছে যে আদা NETosis প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে, এবং এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ আদা একটি প্রাকৃতিক সম্পূরক হিসেবে কাজ করে যা বিভিন্ন অটোইমিউন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রদাহ এবং অন্যান্য উপসর্গের চিকিত্সার জন্য সহায়ক হতে পারে। একটি ক্লিনিকাল ট্রায়ালে, গবেষকরা দেখেছেন যে সুস্থ অংশগ্রহণকারীরা সাত দিন ধরে প্রতিদিন সম্পূরক হিসেবে ২০ মিলিগ্রাম আদা খেলে নিউট্রোফিলের ভিতরে সিএএমপি নামক একটি রাসায়নিক বৃদ্ধি পায়। এই উচ্চ মাত্রার সিএএমপি NETosis-এ বাধা দেয়। NETosis রোধ করার জন্য খুব বেশি প্রাকৃতিক সম্পূরক বা ওষুধ নেই, যা অত্যধিক সক্রিয় নিউট্রোফিলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পরিচিত। তাই, গবেষকরা মনে করেন আদার এমন একটি বাস্তব ক্ষমতা থাকতে পারে যা চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় পরিপূরক হতে পারে। লক্ষ্য হল মানুষের উপসর্গগুলো উপশমে সাহায্য করার ক্ষেত্রে আরও কৌশলগত এবং ব্যক্তিগতকৃত হওয়া।