সূর্যের আলোতে অ্যালার্জি বাড়ছে, বাড়ছে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি

সূর্যের আলোতে অ্যালার্জি বাড়ছে, বাড়ছে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

শরীরের ভিটামিন ডি হল একটি অপরিহার্য উপাদান। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি থেকে শুরু করে, হাড়ের যত্ন নেওয়া— সবেতেই ভিটামিন ডি-এর জুড়ি মেলা ভার। হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে গেলে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকা প্রয়োজন। শরীরের জন্য অপরিহার্য ভিটামিন ডি শরীরের অভ্যন্তরেই উৎপন্ন হয়। ক্যালশিয়াম এবং ফসফরাস শোষণে সাহায্য করে এই ভিটামিন। এ ছাড়াও শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করতে, বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ এবং রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে এই ভিটামিন। এমনকি, হাড় ও দাঁতের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশকেও সহজ করে তোলে ভিটামিন ডি। চিকিৎসকেরাও তাই ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারের দিকে বেশি করে নজর দেওয়ার কথা বলে থাকেন। তবে শুধু খাবারের মাধ্যমে ভিটামিন ডি শরীরে ঢোকে না। সূর্যালোক থেকে ভিটামিন ডি সবচেয়ে বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাবের প্রতিকার হল সূর্যের আলোতে নিজেদের শরীর ভিজিয়ে দিনের বেলা কয়েক মিনিট বাইরে কাটানো। চিকিৎসক দ্বারা সমর্থিত এটাই সবচেয়ে পুরানো পদ্ধতি। কিন্তু জানা যাচ্ছে এটি করা সম্ভবত আর বুদ্ধিমানের মতো কাজ নয়। এর কারণ হল অনেক ব্যক্তিদের মধ্যে ভিটামিন ডি-এর অভাব এবং সূর্যের আলো থেকে হওয়া অ্যালার্জির প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাড়ের চিকিৎসক, চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ এমনকি ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা পর্যবেক্ষণ করেছেন যে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার কারণে, ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি এবং সূর্যআলোকে অ্যালার্জির প্রকোপ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলত চিকিৎসকরা ব্যক্তিদের প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন ডি শোষণের জন্য রোদে মাত্র ৫ থেকে ১০ মিনিট ব্যয় করার পরামর্শ দিয়েছেন। আগে, ভালো ফলাফলের জন্য ২০ থেকে ২৫ মিনিট বাইরের সূর্যালোকে থাকার পরামর্শ দেওয়া হত। ভারতবর্ষের মধ্যে বেঙ্গালুরুতে এই ঘটনা বেশি করে পরিলক্ষিত হয়েছে। হাড়ের ডাক্তার ডাঃ অবিনাশ সিকে-এর মতে প্রায় ৯৫% বেঙ্গালুরুনিবাসীদের ভিটামিন ডি-এর অভাব রয়েছে। ফলত সকাল ৮টার আগে বা বিকাল ৩.৩০ থেকে বিকাল ৫ টার মধ্যে ৫ থেকে ১০ মিনিট রোদে কাটানোর পরামর্শ দেন তিনি। সূর্যের তাপ বেশি প্রখর হলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফুসকুড়ি, জ্বালা, পিগমেন্টেশন এবং আলোর কারণে অন্যান্য ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। প্রায় ২০% রোগী প্রতিদিন এই ধরনের সমস্যা নিয়ে আসে, আর তার মধ্যে শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই, প্রত্যক ব্যক্তির এখন প্রতি ছয় মাসে নিয়ম করে ত্বক এবং ভিটামিনের স্তর পরীক্ষা করা উচিত। যদিও সূর্যের আলো আমাদের সকলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, আমাদের অবশ্যই ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার সাথে সূর্যের সাথে সম্পর্কিত ত্বকের ক্ষতি সম্পর্কে সচেতন হতে হবে এবং সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।