বিশ্বের সবচেয়ে ছোটো মাছ বন্দুকের গুলির মতো জোরে আওয়াজ করতে পারে

বিশ্বের সবচেয়ে ছোটো মাছ বন্দুকের গুলির মতো জোরে আওয়াজ করতে পারে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৫ মার্চ, ২০২৪

প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের নখের প্রস্থের পরিমাপে বিশ্বের সবচেয়ে ছোটো মাছ। কিন্তু এতো ছোটো আকার হলেও বন্দুকের গুলির মতো জোরে আওয়াজ করতে পারে এই মাছ। পিএনএএস জার্নালে প্রকাশিত সমীক্ষা অনুসারে, অ্যাম্বুলেন্স সাইরেন বা জ্যাকহ্যামার নামে এক যন্ত্রের সমান আওয়াজ করতে সক্ষম এই ছোটো মাছগুলো। মায়ানমারের নদীতে দেখতে পাওয়া এই ১২ মিমি মাপের মাছের পুরুষ প্রজাতি, ড্যানিয়েনেলা সেরিব্রাম, প্রায় ১৪০ ডেসিবেলের বেশি শব্দ উৎপন্ন করে। মাছের পটকা দেখতে অনেকটা গ্যাস ভর্তি বেলুনের মতো যা জলের অনেক গভীরেও মাছকে গতি নিয়ন্ত্রণে, শ্বসনে এবং জলের গভীরে সাঁতারের সময় শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এই পটকার কম্পনে মাছগুলো এই শব্দ তৈরি করে এবং এই পদ্ধতিতে সাহায্য করে “ড্রামিং” পেশির ছন্দময় সংকোচন। এই ড্রামিং পেশি, মেরুদণ্ডী প্রাণীদের মধ্যে পরিচিত সবচেয়ে দ্রুত সংকোচনকারী পেশি, যা পটকাকে দ্রুত হারে সংকুচিত এবং প্রসারিত করে, ফলে ড্রামিং শব্দ তৈরি হয়।
কিন্তু ড্যানিয়েনেলা সেরিব্রাম দ্বারা উত্পন্ন শব্দের উত্সের খুব একটা যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা প্রদান করা যায়নি। বার্লিনের চ্যারিটি ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা পর্যবেক্ষণ করেছেন যে মাছটির এক অনন্য শব্দ উৎপাদন ব্যবস্থা রয়েছে, যার মধ্যে একটি ড্রামিং কার্টিলেজ, বিশেষ ধরনের অস্থি এবং ক্লান্তি-প্রতিরোধী পেশি রয়েছে। এই পদ্ধতি মাছের ড্রামিং কারটিলেজকে ত্বরান্বিত করে দ্রুত স্পন্দন করাতে সাহায্য করে। বিজ্ঞানীদের দল উচ্চ-গতি সম্পন্ন ভিডিও রেকর্ডিং ব্যবহার করে শব্দ উৎপাদনের প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করে। শব্দ উৎপন্ন করার জন্য, একটি অস্থি যা পটকার পাশে অবস্থিত একটি বিশেষ পেশি দ্বারা তরুণাস্থির একটি অংশে স্থানান্তরিত হয়। যখন অস্থিটি ছেড়ে দেওয়া হয় তখন এটি পটকায় আঘাত করে এবং ড্রামিং শব্দ করে। পুরুষ প্রজাতির মাছেদের মধ্যে অস্থিটি অনেক বেশি শক্ত, তাই স্ত্রী প্রজাতির মাছেদের ক্ষেত্রে আওয়াজ উৎপন্ন হয় না। কেন মাছগুলো এত জোরে আওয়াজ করে তা বিজ্ঞানীরা সঠিকভাবে বলতে না পারলেও তাদের মতে এটি ঘোলা কর্দমাক্ত জলে ঘুরে বেড়ানোর জন্য বা প্রতিযোগিতা বন্ধ করার জন্য পুরুষদের দ্বারা ব্যবহৃত একটি আক্রমণাত্মক কৌশল হতে পারে।