রোবটের মুখেও হাসি

রোবটের মুখেও হাসি

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১ এপ্রিল, ২০২৪

আমাদের জীবনটা ধীরে ধীরে যান্ত্রিক হয়ে উঠেছে। বাস্তবের কথোপকথন চলে গিয়েছে ভার্চুয়াল চ্যাটে। রক্ত মাংসের মানুষ ছেড়ে আমরা নজর রাখছি কম্পিউটারে। পরিচিত হচ্ছি রোবট সঙ্গীর সাথে। বর্তমানে আমরা কথা বলা রোবটের সাথে অভ্যস্ত হয়ে উঠছি, তবে মুখের অভিব্যক্তি প্রদর্শন করা রোবট নিয়ে কাজ কিন্তু আজও পিছিয়ে রয়েছে। সম্প্রতি এমনই একটি রোবটের কথা শোনা যাচ্ছে যার শুধু অনেক ধরনের মুখের অভিব্যক্তি রয়েছে তাই নয় সে জানে কখন কোন পরিস্থিতিতে সেগুলো ব্যবহার করতে হবে।
কলম্বিয়া ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্রিয়েটিভ মেশিন ল্যাব পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই চ্যালেঞ্জের উপর কাজ করছে। সায়েন্স রোবটিক্সে প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণায় ইমো নামে এমন একটি রোবটের কথা জানা যাচ্ছে যে মানুষের সাথে কথা বলার সময় কার্যকরভাবে তার মুখের অভিব্যক্তি ব্যবহার করে। সে শিখেছে মানুষের সাথে কথা বলার সময় কখন হাসতে হবে এবং কথাবলাকালীন প্রায় ৮৪০ মিলিসেকেন্ড আগে সে অনুমান করতে পারে যে তাকে হাসতে হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং রোবটিক্সের এক গবেষক হড লিপসনের নেতৃত্বে এই দলটি দুটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল: কীভাবে যান্ত্রিকভাবে একটি অভিব্যক্তিপূর্ণ বহুমুখী রোবটের মুখ তৈরি করা যায় যাতে জটিল হার্ডওয়্যার এবং অ্যাকচুয়েশন মেকানিজম জড়িত এবং রোবটের মুখে সঠিক সময়ে সঠিক অভিব্যক্তি ফুটে ওঠা যাতে তা আসল মনে হয়। এই ক্ষেত্রে কখন কোন অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে হবে সেটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ বিলম্বিত মুখের অভিব্যক্তি, অস্বাভাবিক দেখাবে, এবং সময়োপযোগী অভিব্যক্তির জন্য মানুষের মানসিক অবস্থার সঠিকভাবে অনুমান করা প্রয়োজন । ইমোর মানুষের মতো মুখ সহ একটি মাথা রয়েছে যাতে ২৬টি অ্যাকচুয়েটর উপস্থিত যা বিভিন্ন ধরনের মুখের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে সক্ষম। ইমোর মাথা আচ্ছাদিত একটি নরম সিলিকন ত্বকের দ্বারা এবং মাথাটি একটি চৌম্বকীয় সংযুক্তি সিস্টেমের সাথে যুক্ত। ইমোর মুখের অভিব্যক্তি যাতে আরও প্রাণবন্ত হয় তার জন্য গবেষকরা ইমোর চোখে উচ্চ-রেজোলিউশন ক্যামেরা সংযুক্ত করেছে যার সাহায্যে ইমো সরাসরি মানুষের চোখের দিকে তাকাতে পারে। গবেষকের দল দুটি এআই মডেল তৈরি করেছে: একটি যা টার্গেট মুখের সূক্ষ্ম পরিবর্তনগুলো বিশ্লেষণ করে মানুষের মুখের অভিব্যক্তি বোঝে এবং আরেকটি যা অনুরূপ মুখের অভিব্যক্তি ব্যবহার করে মোটর কমান্ড তৈরি করে। গবেষকদের মতে যখন একটি রোবট বাস্তবে মানুষের সাথে কথোপকথনের সময় অভিব্যক্তি সহযোগে যোগাযোগ করবে তখন মিথস্ক্রিয়ার গুণমান উন্নত হবে, মানুষ এবং রোবটের মধ্যে আস্থা তৈরিতেও সাহায্য করবে।