গর্ভধারণ জৈবিক বয়স বাড়িয়ে দেয়

গর্ভধারণ জৈবিক বয়স বাড়িয়ে দেয়

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৪ এপ্রিল, ২০২৪

গর্ভধারণ মেয়েদের শারীরিক বয়স বাড়িয়ে দেয়। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেলম্যান স্কুল অফ পাবলিক হেলথের গবেষকরা ফিলিপিন্সের ১৭৩৫ জন তরুণ- তরুণীর ওপর গবেষণায় জানিয়েছেন মহিলাদের মধ্যে যারা গর্ভবতী হননি তাদের তুলনায় যারা গর্ভবতী হয়েছেন, তাদের বয়স বেশি বলে মনে হয়। কিন্তু পুরুষদের ক্ষেত্রে বাবা হওয়ার কোনো শারীরিক চিহ্ন তাদের শরীরে পড়েনা। উচ্চ উর্বরতা মহিলাদের স্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ুতে নেতিবাচক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে কিনা, তা জানতে এই গবেষণা করা হয়েছিল। দেখতে চাওয়া হয়েছিল রোগ এবং বয়সজনিত শারীরিক অবনতির পেছনে প্রজননজনিত কারণ জড়িত কিনা। গবেষকরা জানিয়েছেন তরুণদের মধ্যে জৈবিক বার্ধক্য কতটা হয়েছে তা নির্ধারণ করা বেশ চ্যালেঞ্জিং। এই গবেষণায় নতুন কিছু সরঞ্জাম, ডিএনএ মিথিলেশন (ডিএনএএম) পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে সেলুলার বার্ধক্য, স্বাস্থ্য এবং মৃত্যুর ঝুঁকি দেখা হয়েছে। ‘এপিজেনেটিক ঘড়ি’ নামে পরিচিত এই সরঞ্জামগুলো জীবনের শুরুর দিকে শরীরে বার্ধক্য দেখা দেওয়ার আগেই বার্ধক্য অধ্যয়ন করতে দেয়।
কলম্বিয়া এজিং সেন্টারের ক্যালেন রায়ান বলেছেন, তাদের গবেষণা থেকে বোঝা যায় গর্ভাবস্থা জৈবিক বার্ধক্যকে ত্বরান্বিত করে, এবং এই প্রভাব কমবয়সী উচ্চ-উর্বরতাসম্পন্ন মহিলাদের ক্ষেত্রে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। একই মহিলার ক্ষেত্রে দেখা গেছে সময়ের সাথে সাথে তারা যখন আবার গর্ভবতী হচ্ছে তাতে তাদের জৈবিক বয়স আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থাৎ প্রতিটি গর্ভাবস্থা মেয়েদের বয়স বাড়াচ্ছে। গবেষকরা মনে করছেন, গর্ভাবস্থা বা স্তন্যপান করানো জৈবিক বার্ধক্যকে ত্বরান্বিত করে। আর্থসামাজিক অবস্থা, ধূমপান, জেনেটিক প্রকরণ বিবেচনা করেও তারা দেখেছেন গর্ভাবস্থার সঙ্গে জৈবিক বার্ধক্যের যোগসূত্র আছে। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই বয়ঃসন্ধিকালে গর্ভবতী হয়েছিল, যে বয়সে মেয়েদের বিকাশ সম্পূর্ণ হয়না। এই ধরনের গর্ভাবস্থা মায়ের ক্ষেত্রে খুব চ্যালেঞ্জিং বিশেষত যদি স্বাস্থ্যপরিষেবা, আর্থিকসংস্থান বা অন্যান্য ধরণের সহায়তা তাদের সীমিত থাকে। এই গবেষণা দ্য প্রসিডিংস অফ ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন তাদের গবেষণালব্ধ ফলাফল মহিলাদের স্বাস্থ্যের ওপর গর্ভাবস্থার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব এবং সদ্য মা বিশেষ করে অল্পবয়সী মায়েদের যত্ন নেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen + eighteen =