প্রয়োজন শেষ হলেই মিলিয়ে যাবে এই প্লাস্টিক

প্রয়োজন শেষ হলেই মিলিয়ে যাবে এই প্লাস্টিক

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২২ মে, ২০২৪

প্লাস্টিকের উপর আমাদের নির্ভরতা আজ এক বিশাল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গবেষকরা তাই এক নতুন ধরনের প্লাস্টিক তৈরি করেছেন- বায়োডিগ্রেডেবল প্লাস্টিক বা জীবাণুবিয়োজ্য প্লাস্টিক। সম্প্রতি নেচার কমিউনিকেশন জার্নালে এই প্লাস্টিকের কথা জানা গেছে। বায়োডিগ্রেডেবল বা জীবাণুবিয়োজ্য প্লাস্টিক হল এমন একধরনের প্লাস্টিক যেটিকে জৈবিক ক্রিয়াকলাপ দ্বারা সহজেই ভেঙে ফেলা সম্ভব। বায়োডিগ্রেডেবল প্লাস্টিক তৈরি করতে, প্রস্তুতকারীদের কিছু উদ্ভিদভিত্তিক অ্যাডিটিভ যৌগ ব্যবহার করেতে হয় যা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন অণুজীব এবং ব্যকটিরিয়ার দ্বারা প্রকৃতিতে বিলীন হয়ে যায়। মনে করা হচ্ছে, বাজারে প্রচলিত প্লাস্টিকগুলোর থেকে এই ধরনের প্লাস্টিক বেশি পরিবেশবান্ধব। কোনও সমস্যা ছাড়াই নাকি এগুলো প্রাকৃতিক ভাবে বিনষ্ট হয়ে যায় এর ভিতরে থাকা ব্যাকটেরিয়া স্পোরের কারণে। এই নতুন ধরনের প্লাস্টিকে রয়েছে- থার্মোপ্লাস্টিক পলিউরেথেন (টিপিইউ) এবং ব্যাসিলাস সাবটিলিস ব্যাকটেরিয়া। প্লাস্টিক উৎপাদনের জন্য উচ্চ তাপমাত্রায় বেঁচে থাকতে এই ব্যাকটেরিয়াকে বিশেষভাবে তৈরি হতে হয়েছে। দেখা গেছে ব্যাকটেরিয়াটি ১৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে আর ব্যাকটেরিয়া স্পোরের সাথে টিপিইউ মিশ্রণের জন্য এই তাপমাত্রা প্রয়োজন। গবেষকরা আরও দেখেছেন যে প্লাস্টিককে বায়োডিগ্রেডেবল করার পাশাপাশি, ব্যাকটেরিয়া স্পোর উপাদানটিকে ৩০% বেশি শক্তিশালী করেছে, আর এর প্রসারণ ক্ষমতারও বৃদ্ধি করেছে। তবে দেখা গেছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল কম্পোস্টিং পদ্ধতির সুবিধা না থাকলে অন্যান্য বায়োডিগ্রেডেবল প্লাস্টিককে ভাঙা সম্ভবপর হয় না। ভারতের বেশির ভাগ শহরেই এই সুবিধা বা ব্যবস্থা নেই। ফলত জৈব প্লাস্টিকের শেষ ঠাঁই হয় শহরের রাস্তায়। যা অন্য প্রচলিত প্লাস্টিকের মতোই পরিবেশের ক্ষতিকারক হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু গবেষকদের দাবী নতুন এই উপাদান অতিরিক্ত অণুজীবের উপস্থিতি ছাড়াই নিজে নিজেই বিলীন হয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 4 =